ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪৮

বিরল এক ক্রান্তীয় ঝড় মালাক্কা প্রণালিতে সৃষ্টি হওয়ায় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডজুড়ে কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণ চলছে। তিন দেশে মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের বিরেউনে নদীতে ধসে পড়া একটি ভবন
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের বিরেউনে নদীতে ধসে পড়া একটি ভবন |এপি

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে বিপর্যয়কর বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এ দাঁড়িয়েছে ২৪৮। গত এক সপ্তাহের অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দুর্গত এলাকায় এখনও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির উদ্ধারকর্মীরা। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে, অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ থাকার কারণে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (বিএনপিবি) শনিবার জানায়, পশ্চিম সুমাত্রার আগাম জেলায় উদ্ধারকর্মীরা নতুন করে আরো লাশ উদ্ধারের পর মোট মৃতের সংখ্যা ২৪৮-এ পৌঁছেছে। এখনও শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। আহতের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক।

বিএনপিবি প্রধান সুআরিয়ান্তো বলেন, “মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ বহু এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা এখনও পৌঁছাতে পারেননি।”

পশ্চিম সুমাত্রা প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র ইলহাম ওয়াহাব শুক্রবার রাতে জানান, পুরো প্রদেশে ৬১ জনের মৃত্যু এবং ৯০ জন নিখোঁজ থাকার পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, “পশ্চিম সুমাত্রাজুড়ে ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনসংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ছাড়িয়েছে।”

উত্তর সুমাত্রায় আরো ১১৬ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আচেহ প্রদেশে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৫।

বিরল এক ক্রান্তীয় ঝড় মালাক্কা প্রণালিতে সৃষ্টি হওয়ায় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডজুড়ে কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণ চলছে। তিন দেশে মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের আট প্রদেশে ১৪৫ জন মারা গেছে এবং ৩৫ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। মালয়েশিয়ায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। এছাড়া শ্রীলঙ্কায়ও অতিবৃষ্টিতে বন্যা ও ভূমিধসে শনিবার দুপুর পর্যন্ত অন্তত ১২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ায় বৃষ্টি কিছুটা কমলেও বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ, এবং হাজারো পরিবার গৃহহীন অবস্থায় রয়েছেন। উত্তর সুমাত্রায় নদীর পানি উপচে পর্বতঘেঁষা গ্রামগুলো দিয়ে বন্যার ঢল বয়ে গেছে, ভেসে গেছে বসতবাড়ি ও অবকাঠামো।

দুর্গত এলাকার রাস্তা, সেতু ও যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাবেও উদ্ধার প্রচেষ্টা ধীরগতির হয়ে পড়েছে।

কেন্দ্রীয় তাপানুলি জেলা ও অন্যান্য দুর্গম অঞ্চলে বিমানযোগে খাদ্য, পানি ও জরুরি সামগ্রী পৌঁছে দেয়া অব্যাহত রয়েছে।