গাজীপুরে মিশ্র ফল বাগানে মাল্টা চাষে সাফল্য জামিরের

বারি-১ জাতের মালটা গাছে মার্চ মাসে মুকুল আসে এবং সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা মিশ্র ফল বাগানে মালটা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) সংবাদদাতা

Location :

Kaliganj
নিজের ফল বাগানে কৃষক জামির
নিজের ফল বাগানে কৃষক জামির |নয়া দিগন্ত

রাজধানী ঢাকার অদূরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা। অনুকূল মাটি, আবহাওয়া ও ভূ-প্রকৃতির কারণে এখানকার কৃষকরা ঝুঁকছেন মিশ্র ফল বাগানে মালটা চাষের দিকে। ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের ভিটি বাঘুন গ্রামের কৃষক মো: জামির হোসেনের মালটা বাগান।

সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজ পাতার মালটা গাছে ঝুলছে শত শত ফল। মনোমুগ্ধকর দৃশ্যে চোখ জুড়িয়ে যায় মুহূর্তেই। মালটার পাশাপাশি বাগানে রয়েছে বড়ই, পেয়ারা, লেবু, আমলকি, পেপে, জামবুড়া ও কলাসহ বিভিন্ন ফলের চারা। তবে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে বারি-১ জাতের মালটা।

চাষি মো: জামির হোসেন বলেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতাধীন লেবু জাতীয় ফসল সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি ২০২০ সালে প্রায় সাত বিঘা জমিতে মালটা চাষ শুরু করেন। শুরুতে কৃষি বিভাগ থেকে পাওয়া ৩০০টি মালটার চারা দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে কাটিং ও কলমের মাধ্যমে চারার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০০-এর বেশি।

তিনি বলেন, ‘ছোট আকারের মালটা প্রতি কেজিতে ছয় থেকে সাতটি আর বড় সাইজের মালটা চারটি মিলে এক কেজি হয়। পাইকারি বাজারে মালটা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। বছরে তিনবার টিএসপি, ইউরিয়া, পটাশ ও বোরন সার প্রয়োগ করতে হয়। গত বছরের তুলনায় গাছগুলো বড় হওয়ায় এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।’

গাজীপুর জেলা কৃষি অফিস জানায়, বারি-১ জাতের মালটা গাছে মার্চ মাসে মুকুল আসে এবং সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা মিশ্র ফল বাগানে মালটা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমানে জেলার ১০০ হেক্টরের বেশি জমিতে মালটা চাষ হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘গাজীপুরের মাটি ও আবহাওয়া মালটা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। মালটা শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। ফলে বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আধুনিক কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফলন আরো বাড়বে। কৃষকদের আমরা নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা করছি।’