নিভৃত গ্রামে বসতবাড়ির আশপাশে কৃষি জমি। জমে থাকা পানি, টলমলে পানিতে সবুজ ঘাসের উঁকি। উড়ছে ঘাস ফড়িং, ছুটছে পোকামাকড়। একইসাথে আছে দেশি প্রজাতির নানান ছোট মাছও, এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। মাছ ও পোকামাকড় শিকারে আনাগোনা বেড়েছে সাদা বকের। ঝাক বেঁধে নামছে জমিতে। মাঝে মাঝে এ ধরনের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ পথচারীরা। এতে কৃষকরাও আনন্দিত।
দুপুর কিংবা বিকেলে এমনি এক অপরূপ চিত্র দেখা গেছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ছোট দাউদপুর গ্রামে। এ গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাকা রাস্তার ধারে খাসবিল এলাকায় দলবেঁধে ছুটে আসছে সাদা বকের সারি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সাদুল্লাপুরের ফসলি মাঠ থেকে বোরো ধান সংগ্রহ করেছেন প্রান্তিক কৃষকরা। প্রায় মাস দেড়েক আগে এ ধান ঘরে তোলার পর থেকে খালি পড়ে আছে কৃষি জমি। বর্ষাকালে এ মাঠ এখন আগাছার দখলে। এরই মধ্যে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ছিপছিপে পানিতে কৃষকরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন রোপা আমন চাষাবাদের। আর এই ফসলি মাঠে ভিড় করছে সাদা বকের দল। হালচাষ করা জমি থেকে বেরিয়ে আসা কীটপতঙ্গ খেতেই দলবব্ধ ছুটছে গ্রামবাংলার বক।
মুরাদ মিয়া নামের এক পথচারী জানান, কৃষি জমিতে সাদা বকের ঝাঁক দেখে অনেকটা মুগ্ধ তিনি। বিশেষ করে বর্ষাকালের হালকা খরায় যখন মাঠ পরিত্যক্ত থাকে তখন এসব বকের আনাগোনা লক্ষণীয়। তবে আগের মতো তেমন দেখা যায় না।
মোজাহার আলী নামের কৃষক বলেন, গত কয়েক বছর এই এলাকা বকের ঝাঁক দেখা যায়নি। এবার হঠাৎ করে খাসবিলে দলে দলে আসছে সাদা বক। এরা তাড়াহুড়ো করে খাচ্ছে পোকামাকড় ও ছোট মাছ। আর পথচারীরা এই বকের মিলন মেলা দেখে দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত।
সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামীণ জনপদে সাদা বক অতি পরিচিত পাখি। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে মাঠের খাল-মিলে এই পাখির অবাধ বিচরণ দেখা মেলে।’
তিনি বলেন, তবে বক এখন আগের তুলনায় অনেক কম যায়। এর কারণ হলো অনেকে বক থেকে শুরু করে গ্রামীণ পখিগুলো অবাধে শিকার করছে, প্রকৃতি ধ্বংস করছে। এসব পাখি কেউ যেন শিকার না করে এ ব্যাপারে সবাইকে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন।