গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামে গড়ে উঠেছে বিশাল ড্রাগন ফলের বাগান। বাণিজ্যিকভাবে বিদেশী ড্রাগন ফল চাষ করে সফল হয়েছেন ফারর্মাস অ্যাগ্রো বাংলা লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই বাগানে ড্রাগন ছাড়াও রয়েছে মাল্টা, লেবু, পেঁপে, পেয়ারা ও কমলাসহ সাইট্রাস জাতীয় বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চারা।
যৌথভাবে পরিচালিত ফারর্মাস অ্যাগ্রো বাংলা লিমিটেডে সরেজমিনে দেখা যায়, গাছে বিভিন্ন রঙের ড্রাগন ফল। এছাড়াও আছে বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ।
ড্রাগন বাগানের তত্ত্বাবধায়ক আশরাফুল আলম বলেন, ‘অন্য কৃষি কাজে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয় কিন্তু ড্রাগন চাষে তা খুব দরকার হয় না। চারা গাছের বয়স ১৮ মাস হলেই ফল আসতে শুরু করে। চৈত্র মাসে গাছে ফুল আসে বৈশাখ মাস থেকে ফল ধরা শুরু হয়।’
উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের সফল উদ্যোক্তা ড্রাগন ফল বাগানের স্বত্বাধিকারী শামসুজ্জামান মুকুল প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাগানের ৩৫০ শতাংশ জমি থেকে একশত পঞ্চাশ শতাংশ জমিতে প্রায় সারে চার হাজার ড্রাগন ফলের চারা রয়েছে। বিষমুক্ত সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি অনুসরণ করেই বাগান স্থাপন ও পরিচর্যার কাজ করা হয়ে থাকে। আশা করছি, এ বছর ভালো ফলন হবে।
ড্রাগন বিদেশী ফল হলেও বাংলাদেশে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হচ্ছে। ডাগ্রন ফল চাষে দেশের কৃষকের আগ্রহ রয়েছে। এটি মূলত পাকা ফল এবং শরবত হিসেবে খাওয়া হয়। অত্যন্ত আকর্ষণীয় রঙের কারণে এর শরবত খুব জনপ্রিয়। ফল থেকে জ্যাম, জেলি, জুস, আইসক্রিম, ক্যান্ডি তৈরি করা হয়।
ড্রাগন ফল গাঢ় গোলাপি, হলুদ ও সাদা রঙের এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। জৈব উপাদান সমৃদ্ধ দো-আঁশ মাটি এবং পর্যাপ্ত সূর্যালোক আছে এরকম উন্মুক্ত স্থানে ড্রাগন ফল ভাল জন্মায়। সাধারণ মার্চ এপ্রিল মাসে চারা রোপণ করা ভাল। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত গাছে ফল থাকে। ড্রাগন চাষে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম জানান, ‘এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। দোআঁশ মাটিতে ড্রাগন ফলের ফলন ভাল হয়। নিরাপদ ফসল উৎপাদনের লক্ষে অধিদফতরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করে জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই ফলে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, প্রোটিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডিসহ নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে।’