ফ্যাক্টওয়াচ

ভিন্ন দেশের ভিডিও দিয়ে গুজব ছড়ানোর অপচেষ্টা শনাক্ত

ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, এটি থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তের গত জুলাইয়ের। ওই সময় দেশ দু’টির সীমান্তে অবস্থিত ‘তা মোয়ান থম’ মন্দিরে কম্বোডিয়ার নাগরিকদের পরিদর্শন ঘিরে দু’দেশের সেনাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ফ্যাক্টওয়াচ
ফ্যাক্টওয়াচ |সংগৃহীত

বান্দরবান সীমান্তে আরাকান আর্মি প্রবেশের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন দেশের বলে শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ। বাংলাদেশে চলমান গুজব ও ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ফ্যাক্টওয়াচ একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সত্তা, যা লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত।

ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, বান্দরবান সীমান্তে আরাকান আর্মি প্রবেশের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে ধারণ করা।

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান সীমান্তে আরাকান আর্মির সদস্যরা মিয়ানমারের নাগরিককে ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকেছে। এরপর তারা বাঙালি পরিবারের ওপর হামলা করতে গিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়ে পড়ে’ এমন দাবিতে ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, এটি থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তের গত জুলাইয়ের। ওই সময় দেশ দু’টির সীমান্তে অবস্থিত ‘তা মোয়ান থম’ মন্দিরে কম্বোডিয়ার নাগরিকদের পরিদর্শন ঘিরে দু’দেশের সেনাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, বান্দরবান সীমান্তে আরাকান আর্মির সদস্যদের ঢুকে পড়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চে ‘BDRHONFDEH6767’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে এটি পাওয়া যায়। গত ১৬ জুলাই সেখানে ভিডিওটি আপলোড করা হয়।

ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়েছে, তা মোয়ান থম মন্দির পরিদর্শনে কম্বোডিয়ান নাগরিকদের বাধা দিয়েছে থাই সৈন্যরা। এই সূত্রে পরবর্তী অনুসন্ধানে ‘পাতায়া পিপল’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ভিডিওটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।

গত ১৫ জুলাই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওইদিন কম্বোডিয়া সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশের ফানম ডং রাক জেলার তা মোয়ান থম মন্দিরে এক কম্বোডিয়ান দর্শনার্থী প্রবেশ করতে গেলে থাই সৈন্যরা বাধা দেয়। এ সময় তারা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে কম্বোডিয়ার সেনারা পৌঁছায়।

থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ন্যাশন’-এর ওয়েবসাইটে গত ১৫ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ভিডিও ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া যায়, বান্দরবান সীমান্তে আরাকান আর্মির সদস্যদের ঢুকে পড়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এসব ভিডিওকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া ভিডিও, খবর ও গুজব ছড়ানোর ঘটনা বেড়েছে। এসব বিষয় নজরে এলে ফ্যাক্ট চেক করে সত্য তুলে ধরা ও গুজব প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে ফ্যাক্টওয়াচ। সূত্র : বাসস