জুবিনের মৃত্যুর সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার আরো ২

আসামের গায়ক জুবিন গর্গের মৃত্যুর ঘটনায় তার ব্যান্ডের আরো দুই সদস্যসহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে হত্যার সন্দেহ জোরদার হয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
জুবিন গার্গ
জুবিন গার্গ |সংগৃহীত

ভারতীয় জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী গায়ক জুবিন গর্গের মৃত্যুর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তার ব্যান্ডের আরো দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেফতার করা হয় এবং শুক্রবার আদালত তাদের ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন শেখরজ্যোতি গোস্বামী ও অমৃতপ্রভ মহন্ত।

ছয় দিন ধরে জেরার পর শেখরজ্যোতি ও অমৃতপ্রভকে গ্রেফতার করা হলো। দু’জনেই সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের সাথে নৌকায় ছিলেন। জুবিন যখন সাঁতার কাটছিলেন, তখন একজন তার কাছে ছিলেন। অন্যজন নৌকা থেকে ভিডিও করছিলেন।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের হাতে কিছু তথ্য আছে। সে জন্য শেখরজ্যোতি ও অমৃতপ্রভকে গ্রেফতার করা জরুরি ছিল।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের মৃত্যু হয়। এরপর জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা এবং নর্থ ইস্ট ফেস্টিভালের ম্যানেজার শ্যামকানু মহন্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে জুবিনের মৃত্যুর সাথে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করল আসাম পুলিশ।

জুবিনের স্ত্রী গরিমা গর্গ বলেছেন, ‘তদন্তের কাজ চলছে। তাই এখন এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়। কী তদন্ত হচ্ছে, তাও আমি জানি না। আইন তার নিজস্ব পথে চলবে। আইনি ব্যবস্থা ও তদন্তের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তদন্ত ঠিকভাবেই করা হবে। আমরা দ্রুত জেনে যাব, ওই দিন কী হয়েছিল। আমরা এটাও জানতে পারব, যদি কেউ এই ঘটনার জন্য দায়ী থাকে, তাহলে তারা কারা এবং তাদের দায় কতটা। তাহলে তাদেরও দ্রুত শাস্তি হবে।’

আসামের ডিআইজি সিআইডি মুন্না প্রসাদ গুপ্তা জানিয়েছেন, ‘আমার টিম সিঙ্গাপুরে গিয়ে তদন্ত করার জন্য তৈরি। অনুমতি পেলেই আমরা সেখানে যাব। আমরা প্রোপার চ্যানেলে আবেদন করেছি। একটা সময়ে টিম সিঙ্গাপুরে যেতে পারবে।’

জুবিনকে কি হত্যা করা হয়েছিল?

সিদ্ধার্থ ও শ্যামকানুকে গ্রেফতার করার পর পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যার চক্রান্ত, অপরাধমূলক চক্রান্ত যার জেরে মৃত্যুর মতো ধারা দিয়েছে। ফলে প্রাথমিকভাবে অন্তত পুলিশ মনে করছে, এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়।

গ্রেফতার হওয়া অমৃতপ্রভ মহন্তর দাদা ভাস্করজ্যোতি মহন্ত আসামের সাবেক ডিআইজি এবং বর্তমানে চিফ ইনফরমেশন অফিসার। তার বড় ভাই ননীগোপাল মহন্ত মুখ্যমন্ত্রীর শিক্ষা উপদেষ্টা।

সিআইডি এখনো পর্যন্ত জুবিনের মৃত্যু নিয়ে ৬০টি এফআইআর করেছে। সেখানে মহন্তসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

মুন্না গুপ্তা জানিয়েছেন, জুবিনের শরীরের দ্বিতীয় অটপ্সির রিপোর্ট তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে। সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ জুবিনের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছে, তারা শিগগিরই অটপ্সির রিপোর্ট তাদের দেবে। জুবিনের ভিসেরার নমুনা দিল্লির সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাব পরীক্ষা করছে। তাদের রিপোর্ট পেয়ে গেলে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে দ্বিতীয় পোস্টমর্টেম রিপোর্টও পাওয়া যাবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে