আদালতের নির্দেশে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করা ইডেন মহিলা কলেজের সেই ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নোবেল ও পাত্রী ইসরাত জাহান প্রিয়ার উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো: জাহাঙ্গীর কবির।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের বিয়ে হয়েছে।
এর আগে, বুধবার ওই শিক্ষার্থীর সাথে নোবেলের কাবিনমূলে বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার। ধর্ষণ মামলার আসামি নোবেলের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন আদালত। একইসাথে উভয়ের সম্মতি সাপেক্ষে এ বিয়ে সম্পাদন করে আদালতকে অবহিত করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দেয়া হয়। এ সময় ওই ছাত্রী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ মে মাইনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছিলেন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক ওই শিক্ষার্থী। মামলা দায়েরের পরই নোবেলকে ডেমরা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দিনই জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী ইডেন কলেজের ছাত্রীর সাথে নোবেলের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের ১২ নভেম্বর গায়ক নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ভুক্তভোগীকে ডেমরা থানাধীন তার বাসায় নিয়ে যান। এরপর কয়েকজন আসামির সহায়তায় ওই ছাত্রীকে আটকে রাখেন এবং আনুমানিক রাত ৮টার দিকে তার মোবাইল নিয়ে নেন।
বাদী তার পরিবারের সাথে কথা বলার জন্য আসামিকে মোবাইল ফোন ফেরত দেয়ার জন্য বললে নোবেল ওই ছাত্রীর ২৬ হাজার টাকার রেডমি ১০ প্রো মোবাইল ফোন ভেঙ্গে ফেলেন। এরপর থেকে আসামি নোবেল তার বসতঘরে আটক রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন। নোবেলের কথামতো বাসায় না থাকলে তার মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিবে মর্মে বলে জানান। তাই বাদী আসামির ভয়ে কাউকে কোনো কিছু বলার সাহস পাননি।
অভিযোগে আরো বলা হয়, এরপর আসামি নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বাদীকে মারধর করতেন। আসামি তার সহযোগী অজ্ঞাত পরিচয় আরো দু’ তিনজনের সহায়তায় বাদীকে নির্যাতন করে একটি কক্ষে আটক করে রাখেন। এমন ঘটনার একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাদীর বাবা-মা তাকে চিনতে পারেন। এরপর তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে গত ১৯ মে রাত সাড়ে ৯টায় নোবেলকে গ্রেফতার করা হয় এবং ভুক্তভোগীকে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডেমরা থানায় অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে নোবেলের নামে মামলা করা হয়।