নির্ভরযোগ্যতার কারণে গোল্ডে বিনিয়োগ সারা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়। আধুনিকায়নের ফলে বর্তমানে বিশ্ব জুড়েই অ্যাপভিত্তিক গোল্ডে বিনিয়োগে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে; ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে, গোল্ড কেনা, সংরক্ষণ অথবা বিক্রি করার প্রক্রিয়াটি অনেকের কাছেই সময়সাপেক্ষ এবং ঝামেলাপূর্ণ মনে হতে পারে। আর এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করবে বাংলাদেশী অ্যাপ ‘গোল্ড কিনেন’।
অ্যাপটিতে মাত্র ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ২২ ক্যারেটের হলমার্ক প্রত্যয়িত গোল্ড কেনা, বিক্রি, উপহার, সংরক্ষণ ও কয়েন অথবা বার আকারে উত্তোলন করার মতো সব সুবিধা রয়েছে। অ্যাপটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যে কেউ যেকোনো জায়গা থেকেই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কোনো ঝামেলা বা মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই গোল্ড বিনিয়োগের প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করতে পারবেন। অ্যাপটি ব্যবহারকারীরা তাদের প্রিয়জনদের গোল্ড উপহারও দিতে পারবেন।
যেভাবে ডাউনলোড করবেন
অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর, উভয় প্ল্যাটফর্ম থেকেই ডাউনলোড করা যাবে। অ্যাপ ইনস্টল করার ধাপগুলোও খুব সহজ। অ্যাপ ডাউনলোড করার পর আপনার মোবাইল নম্বরটি প্রদান করলেই একটি ওটিপি চলে যাবে আপনার ফোনে। ওটিপি উল্লেখ করে প্রাথমিক কিছু তথ্য দিয়ে সহজেই একটি সুরক্ষিত অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে পারবেন।
ফিচার
অ্যাপের ড্যাশবোর্ডে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার- স্বয়ংক্রিয় গোল্ড সঞ্চয়ের অপশন, প্রিয়জনকে গোল্ড উপহার পাঠানোর সুবিধা, নির্ভরযোগ্য উৎস রিয়েল-টাইম গোল্ডের মূল্য জানা ও প্রতিটি লেনদেনের বিস্তারিত রেকর্ড। এমনকি অ্যাপটিতে একটি যাকাত ক্যালকুলেটর রয়েছে। এর মাধ্যমে ইসলামী বিধান অনুযায়ী সঞ্চিত গোল্ডের ওপর ব্যবহারকারীরা সহজে যাকাতের অর্থের পরিমাণ সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
অ্যাপটির মাধ্যমে প্রতিদিনের বাজারের হালনাগাদ দাম অনুযায়ী খুব সহজেই শুধু গোল্ডের পরিমাণ বা মূল্য লিখে বিকাশ বা ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট পরিশোধ করে গোল্ড কেনা সম্ভব। গোল্ড কেনার পর তা আপনার অ্যাপের অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত থাকে।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় বিমাকৃত ডেলিভারির মাধ্যমে গোল্ড সংগ্রহ করা যায়। সাধারণত, ২ গ্রাম থেকে ৫ গ্রাম বারের জন্য ডেলিভারি চার্জ ১৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও, দেশজুড়ে সকল জেলায় পিক-আপ পয়েন্টের মাধ্যমে গোল্ড কয়েন ও বার উত্তোলন করা যায়।
অ্যাপের মাধ্যমে সঞ্চিত গোল্ড ‘ব্যাংক-গ্রেড’ ভল্টে সুরক্ষিত রাখা যায়। অ্যাপটি থেকে চাইলেই তাৎক্ষণিকভাবে গোল্ড বিক্রি করাও সম্ভব। গোল্ড বিক্রি করা অর্থ বিকাশ নম্বর বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যুক্ত হয়ে যায়। গোল্ড কেনা ও বিক্রির সব রেকর্ড অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত অবস্থায় থাকে এবং অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো সময় এই রেকর্ড যাচাইও করা যায়।
এই অ্যাপে লেনদেনের ক্ষেত্রে কিছু নির্ধারিত সার্ভিস চার্জ ও ট্যাক্স রয়েছে। প্রতিটি লেনদেনের উপর ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং গোল্ড সংগ্রহের সময় ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য। এছাড়া, অ্যাপের মাধ্যমে গোল্ড বিক্রি বা ফেরত দেয়া হলে ৬ শতাংশ এবং শো-রুমের মাধ্যমে ১৭ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কাটা হয়। এই চার্জগুলো স্বচ্ছভাবে অ্যাপেই দেখানো হয়, যেন ব্যবহারকারীরা সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
অ্যাপটির রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল অনুমোদন ও লাইসেন্স। এছাড়াও, নিজস্ব অফিস ও শো-রুম, যেখানে গ্রাহক সরাসরি গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য কিংবা গোল্ড সংগ্রহ করা যাবে। গ্রাহকের সন্তুষ্টির জন্য যেকোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা বা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ের সহায়তায় রয়েছে কাস্টমার সাপোর্ট টিম।
অ্যাপটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও কল সেন্টারের মাধ্যমে সহজেই প্রয়োজনে সাপোর্ট নিতে পারবেন প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহারকারীরা।
বর্তমানে বিনিয়োগ ও সঞ্চয়কে আরো সাশ্রয়ী, সহজলভ্য ও বাংলাদেশের সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সুবিধাজনক করে তোলার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের এমন নতুন মাধ্যমগুলো অন্যতম ভূমিকা পালন করছে।