বাংলাদেশ থেকে কাঁঠাল-পেয়ারা আমদানিতে আগ্রহী চীন

‘চীন টানা ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। দেশ দু’টির দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
কাঁঠাল-পেয়ারা
কাঁঠাল-পেয়ারা |সংগৃহীত

বাংলাদেশে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ থেকে কাঁচা আম আমদানির পর তার দেশ এবার কাঁঠাল ও পেয়ারার মতো ফল আমদানির জন্য জোরালোভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, ‘চীনের বাজারে আরো বেশিসংখ্যক বাংলাদেশী উন্নতমানের কৃষিপণ্য প্রবেশ করছে। চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশী কাঁচা আমের প্রথম চালান সফলভাবে চীনে রফতানি করা হয়েছিল এবং আমরা এখন কাঁঠাল ও পেয়ারার প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের জন্য কাজ করছি।’

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বাংলাদেশ-চীন গ্রিন টেক্সটাইল এক্সপো-২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

দু’ দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক উল্লেখ করে ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘চীন টানা ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। দেশ দু’টির দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘গত বছরের আগস্ট থেকে ২০টিরও বেশি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ২০২৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশী করযোগ্য পণ্যের শতভাগের বেশি শূন্য-শুল্ক আরোপ করেছে, যা উভয়ের সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি বেইজিংয়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বস্ত্র শিল্পে সবুজ রূপান্তর উন্নীত করতে জ্বালানি-সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব উপকরণ প্রবর্তনে সহায়তা করতে এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’

রাষ্ট্রদূত ইয়াও একটি টেকসই সবুজ শিল্প শৃঙ্খল গড়ে তোলার জন্য টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি, ডিজিটাল প্রিন্টিং এবং স্মার্ট উৎপাদন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।

চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০২৫ সালকে গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে অভিহিত করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘দু’ দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব সবসময় লাভজনক সহযোগিতায় পরিচালিত হয়েছে।’

তিনি প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের গ্লোবাল গভর্নেন্স ইনিশিয়েটিভ (জিজিআই)-এর কথাও উল্লেখ করেন, যা সার্বভৌম সমতা, আন্তর্জাতিক আইন, বহুপক্ষীয়তা এবং জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়নকে সমর্থন করে। চীন বিশ্বাস করে যে-এটি ন্যায্য, আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির দিকে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

স্যাভর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড আয়োজিত তিন দিনের এই প্রদর্শনীটি বাংলাদেশে চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন (সিইএবি)-এর উদ্যোগে যৌথভাবে আয়োজিত। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং সাংহাই জলবায়ু সপ্তাহ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে রয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, বিটিএমসির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাহিদ হাসান, বিসিসিআই সভাপতি মো: খোরশেদ আলম, সিইএবি সভাপতি হান কুন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বাসস