রাজস্ব খাতকে আরো শক্তিশালী, কার্যকর ও দক্ষ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ভূমি রাজস্ব খাতকে একত্র করে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় আইনজীবী সমিতি।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি, বার কাউন্সিলের সদস্য ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ মো: খসরুজ্জামান।
এ সময় সংগঠনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মো: সাহেদ আলী জিন্নাহসহ বিভিন্ন জেলা ও মহানগর থেকে আগত বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাডভোকেট শাহ মো: খসরুজ্জামান বলেন, ‘কর আহরণ একটি জটিল ও কারিগরি প্রক্রিয়া, যা যথাযথ অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ছাড়া কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যায় না। অথচ অন্যান্য দফতরের অনেক কর্মকর্তা এ বিষয়ে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞ নন।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরিসর বর্তমানে এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে এটি এখন একটি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয়ের সমতুল্য। এই সংস্থার উপর সরকারের অর্থনৈতিক কাঠামো অনেকাংশেই নির্ভরশীল।’
জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবীর মতে, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বৃহৎ ও বহুস্তরবিশিষ্ট মন্ত্রণালয়, যেখানে ব্যাংক, বীমা, কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য সংস্থা ও কার্যক্রম জড়িত। ফলে এর আওতায় রাজস্ব খাত কার্যকরভাবে মনিটর ও পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, “জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও ভূমি রাজস্ব খাতকে সমন্বয় করে আলাদা একটি ‘রাজস্ব মন্ত্রণালয়’ গঠন করলে রাজস্ব সংগ্রহের দক্ষতা ও স্বচ্ছতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। এতে দেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে যে স্থবিরতা বিরাজ করছে, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’
অর্থ উপদেষ্টার সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের ফলে ইতোমধ্যেই এই খাত অনেকাংশে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। একইভাবে রাজস্ব খাতে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠিত হলে তাতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতীয় আইনজীবী সমিতি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন বার অ্যাসোসিয়েশনগুলোর একটি নির্দলীয় ও স্বতন্ত্র ফেডারেশন। দেশের আইন-আদালত, শাসন ও প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গঠনমূলক পরামর্শ ও দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছে সংগঠনটি।
আইনজীবী নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, সরকারের নীতিনির্ধারক মহল এই প্রস্তাব গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।