বাইক রাইডারদের জন্য সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজে কমছে অবৈধ রাইড শেয়ারিং

নিয়ম অনুযায়ী অ্যাপের মাধ্যমে বুক করা মোটরসাইকেল নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে যাত্রীকে তুলে নেয়ার কথা। কিন্তু এখন সেই নিয়ম উপেক্ষিত হচ্ছে। ফলে ছিনতাই, দুর্ঘটনা এমনকি হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বাইক রাইডারদের জন্য সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজে কমছে অবৈধ রাইড শেয়ারিং
বাইক রাইডারদের জন্য সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজে কমছে অবৈধ রাইড শেয়ারিং

ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় প্রায়ই বাইকচালকদের বলতে শোনা যায়, “কোথায় যাবেন? বাইক লাগবে?” যাত্রীরাও ভাড়ার দরদাম করে বাইকে উঠে পড়েন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী অ্যাপের মাধ্যমে বুক করা মোটরসাইকেল নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে যাত্রীকে তুলে নেয়ার কথা। এর বাইরে মৌখিক চুক্তিভিত্তিক রাইড শেয়ারিং অননুমোদিত। কিন্তু এখন সেই নিয়ম অনেকাংশেই উপেক্ষিত হচ্ছে। এর ফলে ছিনতাই, দুর্ঘটনা এমনকি হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

রাইডাররা কেন অ্যাপে যেতে চান না?

বাইক রাইডারদের একটি বড় অংশের বিরুদ্ধে বেশ আগে থেকেই অ্যাপ ছেড়ে চুক্তিতে যেতে চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ৩২ বছর বয়সী বাইক রাইডার মোস্তফা বলেন, “জ্যাম, ধুলাবালি, গরম সব মিলে ঢাকার রাস্তায় বাইকে যাত্রী নিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টকর। তার ওপর কোম্পানি ট্রিপের উপর ২০%-২৫% কমিশন কেটে নেয় যা প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকার মত। এত কষ্ট করে উপার্জিত টাকার বড় অংশ অন্যের পকেটে চলে যায়, এটা মেনে নেয়া যায় না।”

নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করলে মোস্তফা বলেন, “অবৈধ রাইডে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা থাকে ঠিকই, কিন্তু পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে করি।”

এই সমস্যার সমাধানে একটি সমাধান নিয়ে এসেছে দেশের অন্যতম রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম উবার। উবার মোটো রাইডারদের জন্য সাবস্ক্রিপশন পলিসি নিয়ে এসেছে বহুজাতিক এই কোম্পানিটি। নতুন এই সাবস্ক্রিপশন প্ল্যানে রাইডাররা একদিন ও তিন দিনের প্যাকেজে একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে যত খুশি ট্রিপ দিতে পারবেন।এই প্ল্যানে রাইডারদের ট্রিপ প্রতি কোনো কমিশন দিতে হয় না। ফলে রাইডাররা নিজের আয় নিজের হাতে রাখতে পারছেন এবং কাজের সময় নিজের মতো ঠিক করতে পারছেন।

মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে যারা চাকরির পাশাপাশি বাড়তি আয় করতে চান এটি তাদের জন্য বেশ উপকারে এসেছে।

একটি আইটি ফার্মে চাকরি করেন নাদিম আনজুম রুমি। তিনি বলেন, “সপ্তাহে দুই দিন ছুটি থাকে, কিন্তু যে বেতন পাই তাতে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমি উবারের দৈনিক সাবস্ক্রিপশন নিয়ে ছুটির দিনগুলোতে রাইড শেয়ার করি। একটি নির্দিষ্ট ফিতে সারা দিনে যত খুশি ট্রিপ দিতে পারা একটি দারুণ একটা সুযোগ বলে মনে করি।”

যাত্রীরাও এর সুফল পাচ্ছেন। গুলশানের একটি অফিসে কাজ করা আব্দুল্লাহ আল কামাল বলেন, “আমি অফিস থেকে বেশ দূরের একটি এলাকা, ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারে থাকি। সকালে বের হতে দেরি হলে দ্রুত অফিস পৌঁছাতে বাইকে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। আগে অ্যাপে রাইড মিলতো না, চালকরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে চুক্তিতে যাত্রী তুলতেন। এখন উবারে নিয়মিত রাইড পাচ্ছি। একদিন চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, ২৫০-৩০০ টাকার রাইডে আগে ৬০-৭৫ টাকা পর্যন্ত কোম্পানিকে কমিশন দিতে হতো, এখন সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজের কারণে সেটা আর লাগে না।”