ঢাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসার আধুনিক পেমেন্ট সেবা

অনুষ্ঠানে ভিসার প্রতিনিধিরা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য কমার্শিয়াল কার্ড ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক
সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবায় অগ্রণী প্রতিষ্ঠান ভিসা ঢাকায় এমএসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ ও নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করা। ঢাকার শেরাটন হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভিসার এই উদ্যোগ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এমএসএমই) ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় যুক্ত হতে উৎসাহিত করবে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে সহায়তা করবে। অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে ভিসার প্রতিনিধিরা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য কমার্শিয়াল কার্ড ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরেন। এছাড়া তারা ভিসার মানি মুভমেন্ট সলিউশন বা অর্থ স্থানান্তর প্রযুক্তি উপস্থাপন করেন, যা প্রচলিত কার্ডভিত্তিক লেনদেনের গণ্ডি ছাড়িয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য আরো সহজ, নমনীয় ও কার্যকর পেমেন্ট ব্যবস্থার সুযোগ সৃষ্টি করবে।

ভিসার কান্ট্রি ম্যানেজার (বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান) সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘এই আয়োজনে উদ্যোক্তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং ইতিবাচক সাড়া প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এমএসএমই খাতের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য উদ্ভাবনী কমার্শিয়াল পেমেন্ট সলিউশন উন্মোচন এবং আর্থিক খাতের সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি। ডিজিটাল অর্থনীতির যুগে এমএসএমই খাতকে টিকিয়ে রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে ভিসা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এছাড়া একটি বিশেষ আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বক্তব্য দেন ভারতের এইচডিএফসি ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কমার্শিয়াল কার্ড বিভাগের প্রধান অংশুমান চ্যাটার্জী। এইচডিএফসি ব্যাংকে তার ২৪ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে অংশুমান চ্যাটার্জী কমার্শিয়াল কার্ড ব্যবহারে ভারতের সফল অভিজ্ঞতা, কার্যকর কৌশল ও বাস্তবমুখী দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করেন। তিনি বাংলাদেশি বাজারের প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক নানা দিক নিয়ে আলোকপাত করেন, যা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য অত্যন্ত শিক্ষণীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল।

আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব ছিল ‘বাংলাদেশে এমএসএমই খাতের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা। এতে অংশ নেন দেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বরা, যাদের মধ্যে ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এসএমই প্রধান সৈয়দ আবদুল মোমেন তমাল, ইবিএলের এসএমই ও পার্সোনাল লোন বিভাগের প্রধান সালেকীন ইব্রাহিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই ও বিশেষ কর্মসূচি বিভাগের পরিচালক নওশাদ মোস্তফা এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ক্লাস্টার উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রযুক্তি উন্নয়ন) ফারজানা খান।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের টিকে থাকা ও এগিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থনৈতিক পণ্য ও ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব সুবিধা এমএসএমই খাতকে আরো শক্তিশালী ও টেকসই করে তুলতে পারে বলে তারা মত দেন।

সমাপনী বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো: আরিফ হোসেন খান। তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এমএসএমই) খাতের সম্প্রসারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি ছোট ব্যবসাগুলোর জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।