বাংলাদেশ ব্যাংকে সীরাত মাহফিলে ইনসাফভিত্তিক অর্থনীতির ওপর গুরুত্বারোপ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব। জীবনের প্রতিটি সংকটের সমাধান তাঁর সীরাতে নিহিত। তাই অন্তত একবার হলেও নবীজির সীরাতগ্রন্থ পাঠ করা, শিক্ষা গ্রহণ এবং তা জীবনে প্রয়োগ করা উচিত।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

Location :

Dhaka City
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজনে অনুষ্ঠিত পবিত্র সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিলে শরীয়াহভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক জীবন গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় মসজিদে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো: আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো: জাকির হোসেন চৌধুরী।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, শরীয়তের চারটি মৌলিক উদ্দেশ্য হলো- দ্বীনি আদর্শ সংরক্ষণ, জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা, সম্পদ সংরক্ষণ এবং মানবিক মর্যাদা রক্ষা। ইসলাম শুধু ইবাদতের ধর্ম নয়, এটি ন্যায়, ইনসাফ ও মানবকল্যাণের পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। অর্থনীতি, প্রশাসন ও কর্মক্ষেত্রে ইনসাফের বাস্তবায়নই ইসলামী চেতনার প্রতিফলন।

তিনি বলেন, দেশের মনিটারি পলিসির নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সততা, দক্ষতা, আপোষহীনতা, দেশপ্রেম, আমানতদারিতা ও খোদাভীরুতার ওপর দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নির্ভর করে। তাই ব্যক্তি জীবনে স্বচ্ছতা, হালাল উপার্জন, অন্যের হকের প্রতি সচেতনতা ও ন্যায়ের চর্চা অপরিহার্য।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক শরীয়াহ বোর্ড গঠন এবং ইসলামী ব্যাংকিং রেগুলেশন ও পলিসি বিভাগ চালুর উদ্যোগের প্রশংসা করে তিনি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের পূর্ণ বাস্তবায়নে তিনি পৃথক আইন প্রণয়ন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আস্থা পুনরুদ্ধার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শরীয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ সুবিধা চালুর প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব। জীবনের প্রতিটি সংকটের সমাধান তাঁর সীরাতে নিহিত। তাই অন্তত একবার হলেও নবীজির সীরাতগ্রন্থ পাঠ করা, শিক্ষা গ্রহণ এবং তা জীবনে প্রয়োগ করা উচিত।

আমলের গুরুত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো নেক আমলকেই ছোট করে দেখা উচিত নয়। এমনকি একটি গাছ রোপণ করাও আল্লাহর কাছে সওয়াবের কাজ। হাদীস উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘যে ব্যবসায়ী সততা, ন্যায় ও আমানতের সাথে ব্যবসা করে, কিয়ামতের দিন সে শহীদদের সাথে অবস্থান করবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও শরীয়াহভিত্তিক আর্থিক চেতনা জাগ্রত করতে এ মাহফিলটি একটি অনন্য উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। শায়খ আহমাদুল্লাহর বক্তব্য উপস্থিতদের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং অনেক কর্মকর্তা ইসলামী ব্যাংকিং ও শরীয়াহসম্মত জীবনাচারে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি