এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে , ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি হবে ভোগ্যব্যয়।
ব্যাপক রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন খরচের কারণে এ ভোগ্যব্যয় বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এডিবি’র এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর-২০২৫ প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক শুল্ক বৃদ্ধি, যেমন- যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে তীব্র প্রতিযোগিতা রফতানি খাত ও এর প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রফতানিকারকদের দাম কমাতে হতে পারে।
এতে আরো বলা হয়, সরবরাহের দিক থেকে, পারিবারিক ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে পরিষেবা সম্প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া এবং কার্যকর সরকারি নীতি সহায়তার ওপর নির্ভর করে কৃষি প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে, শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি মন্থর হতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাঁচ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো চার শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক রফতানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.২ শতাংশ।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো লক্ষ্য করা যায়নি। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এডিবি আউটলুকে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল নয় দশমিক সাত শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস ও শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চলতি হিসাবে জিডিপির ০.০৩ শতাংশের সামান্য উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপির ১.৫ শতাংশ ঘাটতি হয়।
এডিবি একটি শীর্ষস্থানীয় বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক, যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শক্তিশালী প্রবৃদ্ধিকে সহযোগিতা করে। এটি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে এর ৬৯টি সদস্য দেশ রয়েছে, যার মধ্যে ৫০টি সদস্য এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে। বাসস