বিনিয়োগকারীরা নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষা করছে : আমীর খসরু

জুলাই আন্দোলন নিয়ে বিভাজন হচ্ছে। তবে আন্দোলন হাইজ্যাক করার সুযোগ নেই। যাদের নির্বাচন ভীতি রয়েছে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পরামর্শ দিচ্ছি।

অনলাইন প্রতিবেদক
বক্তব্য দিচ্ছেন আমীর খসরু
বক্তব্য দিচ্ছেন আমীর খসরু |নয়া দিগন্ত

নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জুলাই আন্দোলনকে সফল করতে হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার আসতে হবে। দেশের বিনিয়োগকারীরা নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষা করছে।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভাসানী জনশক্তি পার্টির উদ্যোগে ‘উত্তাল জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ রাজনীতিবিদ, ছাত্র-জনতার অবদান এবং আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আমীর খসরু বলেন, জুলাই আন্দোলন নিয়ে বিভাজন হচ্ছে। তবে আন্দোলন হাইজ্যাক করার সুযোগ নেই। যাদের নির্বাচন ভীতি রয়েছে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পরামর্শ দিচ্ছি।

তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন নতুন কিছু না। বাংলাদেশের মানুষের ডিএনএতে আছে। হাসিনার যাওয়া ছাড়া আর কোনো গতি ছিল না। ৫ আগস্ট তার পতন না হলে আমরা বাড়ি ফিরে যেতাম না। আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকত।

তিনি আরো বলেন, দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না, হচ্ছে না বিদেশী বিনিয়োগও। বিপ্লবের পর যেসব দেশ নির্বাচন বিমুখ হয়েছে, সেসব দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দায়বদ্ধ প্রশাসনের জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।

আমীর খসরু বলেন, আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল মালিকানা ফিরে পাওয়া, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়া। আমরা আন্দোলনের জায়গাটাতে কোনো বিভাজন চাই না। বিএনপির নেতকর্মী আহত-নিহত বেশি হলেও বিএনপি আন্দোলনের কৃতিত্ব দাবি করেনি। আন্দোলনকে সফল করতে হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার আসতে হবে। আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষা করছে। গণতন্ত্রের একমাত্র ভালো দিক হচ্ছে, সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জবাবদিহিতার ভয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, বিশ্বের যেসব দেশ বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে, তারা যত তাড়াতাড়ি নির্বাচিত সরকার গঠন করেছে, তত তাড়াতাড়ি দেশের উন্নতি হয়েছে। আর যেসব দেশে নির্বাচিত সরকার আসতে দেরি করেছে, তারা ব্যর্থ রাষ্ট্র বলে পরিচিতি পেয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিভেদ না থাকলে তো রাজনীতি চলবে না। আমরা শেখ হাসিনার বাপের মতো বাকশাল করতে বসিনি। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষের চিন্তা-ভাবনার যে পরিবর্তন হয়েছে, এই পরিবর্তন মাথায় নিয়ে রাজনৈতিক দলের কাজ করতে হবে।

ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, ভাসানী জনশক্তি পার্টির মুখপাত্র মো: আবদুল কাদের, প্রেসিডিয়াম মেম্বার পারভীন নাসের ভাসানী, আমিনুল ইসলাম সেলিম, অ্যাডভোকেট মাহমুদ আলী, জান্নাতুল ফেরদৌস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ প্রমুখ।