বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র না থাকলে কোনো শ্রেণি বা ধর্মের অধিকারই প্রতিষ্ঠিত হয় না। শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে মানুষের ভোটাধিকার ও ধর্ম পালনের অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হয়েছিল।
আজ শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন হলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কেয়ারটেকারদের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল প্রশ্ন তুলেন, অগণিত মুসলমান, মাদরাসা, মসজিদ, ইমাম-উলামা থাকা সত্ত্বেও দেশে কেন এত অন্যায়-দুর্নীতি, চুরি এবং অর্থপাচার হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘একটা মসজিদ তৈরি করতে মানুষ যে আগ্রহ দেখায়, সেই আগ্রহ ভালো মানুষ তৈরিতে কোথায় হারিয়ে যায়, আমি বুঝি না।’
তিনি জানান, ধর্ম ও নৈতিকতা সমাজে কিভাবে প্রয়োগ করা যায়- এ নিয়ে দেশে আরো গভীর আলোচনা ও উদ্যোগ জরুরি।
ইন্দোনেশিয়ার উদাহরণ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেখানে সরকার যেই হোক, কমিউনিস্ট, ইসলামী বা গণতান্ত্রিক, অ্যাসোসিয়েশন অব উলামা নামের শক্তিশালী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয় না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপিকে ‘উদারপন্থী গণতান্ত্রিক দল’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র না থাকলে কোনো শ্রেণি বা ধর্মের অধিকারই প্রতিষ্ঠিত হয় না। গত ১৫–১৬ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে মানুষের ভোটাধিকার ও ধর্ম পালনের অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা সমালোচনা করে বলেন, কিছু আলেম-ওলামা শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়েছেন, যেটা প্রশ্নের জন্ম দেয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় লোক নিয়োগ দেয়ায় ধ্বংস হয়ে গেছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে ইসলামী ফাউন্ডেশনকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে এবং রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন খবরের কাগজে দেখি কত অপকর্ম। তবে নৈতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে দেশে হত্যা, রাহাজানি, অপরাধ অনেকটাই কমে যেত। নৈতিকতা আসে মাদরাসা, স্কুল, শিক্ষক ও পরিবার থেকে; তাই এগুলোকে শক্তিশালী করাই হবে অগ্রাধিকার।
ফখরুল আহ্বান জানান, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে, যাতে গণতান্ত্রিক সরকার ও গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট গঠন সম্ভব হয়। সেই পার্লামেন্টেই জাতীয় সমস্যাগুলো উত্থাপন ও সমাধান হবে- এটাই হবে জনগণের সিদ্ধান্ত।



