বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা ভয়ঙ্কর ফ্যাসীবাদের হাত থেকে আপাতত মুক্তি পেয়েছি। এই মুক্তি তখনই চূড়ান্ত হবে যখন তাদের আমরা রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘যারা লুটপাট করে, যারা ব্যাংক লুট করে, যারা চাঁদাবাজী করে, যারা মানুষের সম্পত্তি দখল করে নিয়ে যায় তাদের সাথে আমাদের কোনোরকমের আপস থাকবে না। তাদের আমরা কখনোই স্বীকার করবো না এবং তাদের আমরা কোনোমতেই সামনে আসতে দেবো না।
শুক্রবার বিকেলে উত্তরার আজমপুরে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। উত্তরার আজমপুরে আমির কমপ্লেক্সের সামনে মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে এই সমাবেশ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী পণ্য রফতানির ওপর সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের সংবাদকে ‘দেশের জন্য ভালো খবর’ অভিহিতি করে এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাদুবাদ জ্ঞাপন করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আজকে একটা ভালো খবর আছে। কয়েক দিন আগে আপনারা দেখেছেন যে- আমেরিকা আমাদের পণ্যের ওপর ট্যারিফ আরোপ করেছে। ট্যারিফ কী জানেন? আমরা যেসব পণ্য রফতানি করবো তার ওপরে ৩৫ ভাগ ট্যাক্স নিয়ে নেবে। ওটাকে (যুক্তরাষ্ট্র ট্যারিফ) আমাদের পররাষ্ট্র দফতর এবং উপদেষ্টারা আলোচনা করে কমিয়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা বড় দায়িত্ব পালন করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের বৈঠক গতকাল শেষ হয়েছে। আমরা আশা করছি, দু’য়েক দিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন- আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনটা আমরা চাই, দেশের মানুষ চায়, দেশের মানুষ একটা নির্বাচিত সরকারের অধীনে দেশ পরিচালনা করতে চায়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার উপরে যে আস্থা রেখেছিল জনগণ একইভাবে আজকে তারা তারেক রহমান সাহেবের উপর আস্থা রাখছে।’
তারেক রহমানের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, ‘আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবো। যে বাংলাদেশে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে, যে বাংলাদেশে মানুষ ভোট দিতে পারবে, যে বাংলাদেশে গরীব থাকবে না। আস্তে আস্তে উন্নতির দিকে যাবে এবং বারবার করে বলেছেন যে- ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
আগামীতে তারেক রহমান নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রান্তিক মানুষের জন্য ‘ফার্মাস কার্ড’, ‘স্বাস্থ্য কার্ড’, ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নিয়েছেন তার কথাও বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এক বছর আগে এই দিনে উত্তরা উত্তাল হয়েছিলে উল্লেখ করে ফ্যাসিবাদী পতনের আন্দোলনের শেষ দিকে শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের কথা মনে করে শহীদদের পরিবারের বেদনা-কষ্টের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএমএ আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নিরব, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, জাসাসের হেলাল খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীরসহ শহীদদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।