জুলাই সনদ নিয়ে হেলাফেলা করা যাবে না : রাশেদ প্রধান

‘অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। একইসাথে ওই আদেশের ওপর জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজন করতে হবে।’

অনলাইন প্রতিবেদক
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাগপার মানববন্ধনে রাশেদ প্রধান
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাগপার মানববন্ধনে রাশেদ প্রধান |নয়া দিগন্ত

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ১৭ তারিখ জুলাই সনদ সাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। কিন্তু এর মাধ্যমে কোনো আইনগত ভিত্তি তৈরি হচ্ছে না, এটা শুধুমাত্র এক আনুষ্ঠানিকতা। বিএনপি গণভোটে রাজি ছিল না। এখন ঠিকই রাজি হয়েছে কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট করতে চায়। একই দিনে দুই ভোট হলে গ্রামাঞ্চলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোট কার্যক্রম সম্পন্ন করা দুরূহ হয়ে যাবে। প্রতীক নির্ভর জাতীয় নির্বাচন মুখ্য এবং প্রশ্ননির্ভর গণভোট গৌণ হয়ে যাবে। জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে হেলাফেলা করা যাবে না। কথা বার্তা পরিষ্কার, অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। একইসাথে ওই আদেশের ওপর জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজন করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সাত দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাগপার মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ প্রধান বলেন, ‘বিএনপির বড় নেতারা এতদিন বলেছে পিআর কি জিনিস তা নাকি তারা বুঝে না। গতকাল বিএনপির আরেক বড় নেতা বলেছেন, পিআর পদ্ধতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সংসদে হবে। আপনারা নাকি বুঝেনই না পিআর পদ্ধতি কি, তাহলে আগামী নির্বাচিত সংসদে সিদ্ধান্ত নিবেন কিভাবে? জাগপা ছোট দল, আমরা ১-২ শতাংশের হিসাব করি। আপনারা উচ্চ কক্ষের প্রতিনিধি ঠিক করছেন, চার কোটি বেকারকে ক্ষমতায় এসে চাকরি দিচ্ছেন, আপনারা এত জনপ্রিয় দল পিআর পদ্ধতিতে ৫১ শতাংশ ভোট পেতে ভয় পাচ্ছেন কেন? আপনারা বলেন জনগণ পিআর পদ্ধতি বুঝে না, আসেন পরীক্ষা হয়ে যাক। জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোটে পিআর পদ্ধতির পক্ষে বিপক্ষে প্রশ্ন রাখুন। বাংলাদেশের জনগণ যেই রায় দিবে তাই মাথা পেতে নিব।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রাশেদ প্রধান বলেন, ‘জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেন। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মতোই তাদের বিচার শুরু করেন। আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া প্রশাসনকে পরিবর্তন করতে পারেন নাই। এর মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপিপন্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন। এই প্রশাসন দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না। প্রশাসনকে রদবদল করতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে, পিআর পদ্ধতিতে, ভারতের প্রভাবমুক্ত হতে হবে।’

জাগপা’র মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর রাজপথে আন্দোলন করতে হবে এটা বুঝতে পারি নাই। সাতটি দল বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমে এসেছে। আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতি এবং একমাত্র পিআর পদ্ধতিতেই করতে হবে।’

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, সৈয়দ মো: সফিকুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক এস এম জিয়াউল আনোয়ার, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, শ্রমিক জাগপা সভাপতি আসাদুজ্জামান বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।

এদিকে, জাগপার সাত দফা দাবি নিয়ে দেশের সাত বিভাগীয় শহরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভাগীয় শহরে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামে প্রেসিডিয়াম মেম্বার এ এম এম আনাছ, রাজশাহীতে প্রেসিডিয়াম মেম্বার মো: শামীম আক্তার পাইলট, সিলেটে সাংঠনিক সম্পাদক মো: শাহজাহান আহমদ লিটন, খুলনায় জাগপা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, ময়মনসিংহে যুব জাগপা সাংঠনিক সম্পাদক ওলিউল আনোয়ার, রংপুরে জেলা সমন্বয়ক মাসুম বিল্লাহ, বরিশালে জেলা সহসমন্বয়ক মনিরুজ্জামান মনির।