জাতি আজ এক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক ইভেন্ট নয়; বরং দীর্ঘ ১৮ বছর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত জনগণের ন্যায্য অধিকার পুনরুদ্ধারের এক ঐতিহাসিক সুযোগ। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে- জাতির ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠ কখনো ব্যর্থ হয় না। তাই বিভাজন নয়, এখন প্রয়োজন ঐক্য ও মূল্যবোধনির্ভর রাজনীতির চর্চা।
রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীতে ‘জুলাই জোট’ আয়োজিত ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: তরুণ আলেমদের ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত আলেমরা এসব কথা বলেন।
বক্তারা তরুণ আলেম সমাজকে বিভাজনের হাতিয়ার না হয়ে ঐক্যের ধারক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আবেগের অনুসারী নয়, বিবেকের আলোকবর্তিকা এবং প্রান্তিক রাজনীতির শিকার না হয়ে মূল্যবোধনির্ভর নেতৃত্বের নির্মাতা হতে হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জুলাই জোটের সদস্য মাওলানা মাবরুরুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জোটের অন্যতম সদস্য মাওলানা জামিল সিদ্দিকী। প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক ও রাষ্ট্রচিন্তক মাওলানা মূসা আল হাফিজ।
প্রধান আলোচক তরুণ আলেমদের প্রতি নিজের প্রত্যাশার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ইসলাম ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো কর্মসূচির নাম নয়, ইসলাম হলো- মানবিকতা, নৈতিকতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের আহ্বান।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান, প্রিন্সিপাল মাওলানা সালেহ আহমাদ আজম, লেখক-সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল ফারুক, ডাকসুর ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, লেখক ও গবেষক মাওলানা ইফতিখার জামীল, এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা আশরাফ মাহদী ও যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা সানাউল্লাহ খান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুর্শিদ সিদ্দিকী, যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা জাহিদুজ্জামান, ডাকসু ভিপিপ্রার্থী জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ, ছাত্র মজলিসের সাবেক সভাপতি মাওলানা বেলাল আহমাদ চৌধুরী, মাওলানা তানজিল আমীর, মাওলানা জাওয়াদ আহমাদ, মাওলানা সাব্বির আহমাদ, মাওলানা তকী হাসান, জুলাই জোটের মাওলানা সাইফুল্লাহ তামিম, মাওলানা আনাস বিন ইউসুফ, মাওলানা সাজিদ আব্দুল্লাহ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা ইকরামুল মারজান চৌধুরী, মাওলানা ইমরুল শাহেদ ও মাওলানা রশিদ আহমাদ তকী।
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ কারা শাসন করবে- তা দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে। অন্য কোনো দেশ সেটা নির্ধারণ করার কেউ নয়।
বৈঠকে বিভাজন এড়িয়ে ঐক্যের রাজনীতি ও ক্ষমতার বদলে মূল্যবোধের রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করে বক্তারা বলেন, আমরা চাই- একটি আধুনিক, আত্মমর্যাদাশীল, নৈতিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
গোলটেবিল বৈঠকে আগামী নির্বাচনে ধর্মীয় ও মতাদর্শিক বিভাজন এড়ানো, তরুণ আলেমদের ঐক্য ও মূল্যবোধনির্ভর রাজনীতির নেতৃত্বের অংশীদার করা এবং উন্নয়ন ও নৈতিকতার সমন্বয়ে আধুনিক-আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ গঠনের উপায় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।



