নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রাক্কালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘খুব শিগগিরই’ দেশে ফেরার বার্তা দিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে দলের মহাসচিব এই বার্তা দেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে যেহেতু সবই এখানে উপস্থিত আছেন, আমাদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত আছেন, আমি আপনাদেরকে জানাতে চাই যে আমাদের নেতা ‘খুব শিগগিরই’ আমাদের মাঝে আসবেন।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা যেদিন আমাদের মাঝে আসবেন, যেদিন বাংলাদেশে পা দেবেন সেদিন যেন সমগ্র বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে। এই কথাটা আপনাদের মনে রাখতে হবে… পারবেন তো। ইনশাআল্লাহ। আমরা সেদিন গোটা বাংলাদেশের চেহারাকে বদলে দিতে চাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সামনের দিকে আগাতে চাই, প্রগতির দিকে আগাতে চাই। বাংলাদেশকে আমরা একটা মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের নেতার যে চিন্তাভাবনা তা বাস্তবায়িত করার জন্য আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।
রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ শীর্ষক এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। গত রোববার থেকে এই কর্মশালা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা অংশ নিচ্ছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন সংগ্রাম-লড়াই হচ্ছে আমাদের এই নির্বাচনে জয় লাভ করার। এই নির্বাচনে আমাদেরকে পুরোপুরিভাবে জয় লাভ করতে হবে, যাতে আমরা বাংলাদেশকে সামনে দিকে এগিয়ে নেয়ার পাই। অনেক বাধা আসবে, অনেক বিপত্তি আসবে, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক প্রচারণা হচ্ছে, হতে থাকবে। কিন্তু এই সবগুলোকে কাটিয়ে উঠে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। বিএনপি কোনোদিনই পরাজিত হয়নি, পরাজিত হবে না।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে এই দেশের জনগণের দল, বিএনপি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের দল, বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের সংগ্রামের দল- এই কথাগুলো সবসময় মাথার মধ্যে রাখবেন। আর অন্য কোনো কিছু আপনাদেরকে সাফল্য দেবে না। আপনাদেরকে সাফল্য দেবে আপনাদের মধ্যে ঐক্যপাত ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য এবং আপনাদের যে চেতনা সামনের দিকে যাওয়ার, জাতীয়তাবাদী দর্শনে আমরা দীক্ষিত হয়েছি, আমরা যে গণতন্ত্রের দর্শনে দীক্ষিত হয়েছি সেদিকে এগিয়ে যাওয়ার এই চেতনা। একটা কথা আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৯৭১ সাল আমাদের অস্তিত্ব…. এ কথাটা খুব জোরে-সোরে মনে রাখবেন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমাদের রুহুল কবির রিজভী সাহেব এখানে বলেছেন যে পেছন থেকে অন্ধকারের মধ্য দিয়ে একটা কালো থাবা বেরিয়ে আসছে কিনা? আরেক ফ্যাসিস্ট অন্যদিক থেকে আমাদের উপরে চেপে বসতে চাইছে কিনা? আজকে মানুষকে বিভ্রান্ত করে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের প্রিয় ধর্মকে ব্যবহার করে তারা আজকে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে কিনা? সেই শক্তির বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। একদিকে আমাদের বাংলাদেশকে একটা রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় অবস্থানের মধ্যে দাঁড় করার লড়াই। আরেকদিকে এই অপশক্তিকে রুখে দেয়ার লড়াই। এই দু’টিকে নিয়েই আপনাদেরকে আগাতে। আমরা সবসময় ইতিবাচক রাজনীতি করি, আমরা সবসময় অগ্রবর্তী চিন্তা করি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে এখানে যেসব আলোচনা হবে শুধু শুনবেন আর নোট নিলেই হবে না। এগুলোকে জনগণের সামনে উপস্থাপিত করতে হবে যে আমরা এই কাজগুলো করতে চাই। এটা যদি আপনারা করেন, তাহলে নিশ্চয়ই জনগণ আপনাদের দিকে আকৃষ্ট হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষের জীবনটাই হচ্ছে সংগ্রাম, তেমনি একটা জাতিকে উপরে উঠতে সংগ্রাম করে উঠতে হয়। আমরা সেটা বারবার করেছি। বারবার আমাদের জনগণ প্রাণ দিয়েছে, আমাদের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে। এবারের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে ২৪-এর জুলাই যুদ্ধে এবং তার আগে একাত্তরে আমরা যুদ্ধ করেছি। এটাকে এক করে সমস্ত শক্তিতে ঐক্যবদ্ধ করে আসুন আমরা এই লড়াইয়ে জয় লাভ করার শপথ গ্রহণ করি।
একই সাথে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া চান বিএনপি মহাসচিব।
‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় বিএনপির নেতারা অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।



