আখতার হোসেন

কিছু বিষয় এখনো অস্পষ্ট, শেষ মুহূর্তে সংশয় তৈরি করেছে

‘কিন্তু শেষ মুহূর্তের কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয়ের জায়গা তৈরি করেছে। আসলে জাতিকে অস্পষ্ট রেখে কোনো উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। আমরা জুলাইয়ের ১৬ তারিখে যে খসড়াটি পেয়েছি, সেখানে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’র বিষয়গুলো পরিষ্কার করা হয়নি।’

অনলাইন প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন |ফাইল ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কিছু বিষয় এখনো অস্পষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। ফলে সনদে স্বাক্ষরের মুহূর্তে এসে তা কিছু সংশয় তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জরুরি বৈঠকে তিনি বলেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তের কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয়ের জায়গা তৈরি করেছে। আসলে জাতিকে অস্পষ্ট রেখে কোনো উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। আমরা জুলাইয়ের ১৬ তারিখে যে খসড়াটি পেয়েছি, সেখানে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’র বিষয়গুলো পরিষ্কার করা হয়নি।

‘নোট অব ডিসেন্ট’গুলোকে একটি সংজ্ঞার আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নোট অফ ডিসেন্ট’র একটি সংজ্ঞা প্রয়োজন এবং যেভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে, সে পথনকশা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন।

আখতার হোসেন বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য— জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পথকে পরিষ্কার করা, তারপরই আমরা সনদ স্বাক্ষরের দিকে অগ্রসর হবো। সব কিছু পরিষ্কার হওয়ার পর যদি সনদ স্বাক্ষরিত হয়, তবে সেটিই হবে আমাদের সাফল্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেন জবাবদিহিতাপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হতে পারে— সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ঐক্যবদ্ধ কমিশনের রাজনৈতিক দলগুলো এক অভূতপূর্ব পদ্ধতিতে, সুন্দর সহনশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রণয়নের দিকে এগিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার মধ্য দিয়ে এসেছে। বাস্তবায়নের যে প্রক্রিয়া আমরা এক বছর ধরে আলোচনা করেছি, সেখানে সুস্পষ্ট বিকৃতি হয়নি। আমরা একটি আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের কথা বলেছি। সেটি যদি সাংবিধানিক আদেশ নামে নামকরণ করা হয়, তাহলে অনেকের জায়গা থাকে।

আখতার হোসেন বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দিয়েছি— সেটি ‘জুলাই আদেশ’ বা ‘সাংবিধানিক সংস্কার আদেশ’- যেকোনো নামেই হোক না কেন, আমরা সেটি বাস্তবায়নের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা মনে করি, এ আদেশ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, যিনি সরকারের প্রধান, তিনিই জারি করবেন। এবং জনগণের মধ্য দিয়ে যে অভিপ্রায় ইতোমধ্যেই প্রতিফলিত হয়েছে, সেটিকে বাস্তব রূপ দিতেই তিনি রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান হিসেবে এ আদেশ বাস্তবায়ন করবেন— এই আশাবাদ আমরা ব্যক্ত করছি।

তিনি বলেন, একইসাথে আমরা যে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছি, সেই গণভোটের প্রশ্ন এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। গণভোটের দিন-তারিখসহ বিষয়গুলো জাতির কাছে এবং আমাদের কাছেও স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, একইসাথে আমরা সংবিধানের এতগুলো মৌলিক বিষয় পরিবর্তনের যে প্রস্তাব করেছি, তা শুধুমাত্র সংশোধনের মাধ্যমে টেকসই করা সম্ভব নয়— এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত। তাই মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কার সই করার পরই পরবর্তী নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ক্ষমতার অধিকারী হবেন। সংসদ সদস্যরা ‘কনস্টিটিউয়েন্ট পাওয়ার’র দায়িত্ব পাবেন— এই বিষয়টিও আমাদের কাছে পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।

এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, নতুন সংবিধান অন্তর্ভুক্ত করা হবে না, সেটি ‘সংস্কার সংবিধান’ হিসেবে বিবেচিত হবে— এ বিষয়টি নিয়েও আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি। আমরা বঙ্গবন্ধু কমিশনে অনেক আলোচনা করেছি, এবং মতভেদ থাকা সত্ত্বেও জাতির স্বার্থে এখানে একত্র হয়েছি। ঐকমত্য কমিশন ধৈর্য ধরে আমাদের বক্তব্য শুনেছে।