জাতীয় বিপ্লব দিবসে বিএনপির র‌্যালি

আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে : মির্জা ফখরুল

‘খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই—নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন আর গণভোট একই দিনে হতে হবে এবং সে নির্বাচন ২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষ কিছুতেই তা মেনে নেবে না।’

অনলাইন প্রতিবেদক
বিএনপির র‌্যালিতে মির্জা ফখরুল ও অন্য নেতারা
বিএনপির র‌্যালিতে মির্জা ফখরুল ও অন্য নেতারা |নয়া দিগন্ত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই—নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন আর গণভোট একই দিনে হতে হবে এবং সে নির্বাচন ২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষ কিছুতেই তা মেনে নেবে না।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সংহতি বিপ্লব’ রালির আগে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তারেক রহমান। সেই সংস্কারের কাজ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু করলে আমরা তাদেরকে পূর্ণ সমর্থন জানাই। প্রায় এক বছর এই সড়ক তৈরির কাজ করেছেন তারা। গত ১৭ অক্টোবর তাদের দলগুলো একমত হয়েছে, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোতে আমরা স্বাক্ষর করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেগুলো গ্রহণ করিনি। কনফারেন্স করে তা বলেছি—পরবর্তী সময়ে আমরা দেখলাম, হঠাৎ করেই উপদেষ্টা কাউন্সিলের একজন সদস্য প্রেস কনফারেন্স করে বললেন যে তাদের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে; রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দেয়া হবে, যাতে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। তাহলে এতদিন ধরে যে ঐক্যবদ্ধ কমিশনে বসে সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে কাজ করেছেন, আমাদের প্রতিনিধি ছিল, সব দলের প্রতিনিধি ছিল—তাহলে এটা কেমন হলো? অসংখ্য টাকা খরচ করে কাজটি করলেন, সেটাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সমস্যা সমাধান হলো না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল জোট বানিয়ে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে যে নির্বাচনের আগেই গণভোট হতে হবে। আমরা বলেছি—গণভোট নির্বাচনের দিনই হতে হবে। কারণ, দু’টি ভোট করতে গেলে অনেক টাকা খরচ হবে এবং মূল নির্বাচনের গুরুত্ব কমে যাবে। আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যাদের আমরা সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি, তারা নিজেরাই এমন ব্যবস্থা নিচ্ছে, যাতে নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং ইনশাআল্লাহ এই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। যুবকদের প্রতি আহ্বান জানাতে জানিয়ে তিনি বলেন—আসুন, আপনারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সামনে এগিয়ে যাই এবং আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত করি।’

সমাবেশের পর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও সংহতি দিবসের র‌্যালি আজ বিকেল ৪টা ৪ মিনিটে শুরু হয়েছে। রালিতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে যোগ দিয়েছেন।

র‌্যালিটি কাকরাইল, মালিবাগ, মগবাজার, বাংলামোটর হয়ে কাওরান বাজার সার্ক ফোয়ারা গিয়ে শেষ হবে। কর্মসূচি উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।