খেলাফত মজলিসের মাসিক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি এক বিধি মোতাবেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারিরীক শিক্ষা বিষয়ক নতুন দু’টি পদে ৫১৬৬ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে কোমলমতি শিশুদের জন্য সহকারী ধর্মীয় শিক্ষক পদটির প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। সহকারী ধর্মীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি না করে সহকারী সঙ্গীত শিক্ষক পদে নতুনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের সাথে যায় না। যেখানে নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন ছিল সেখানে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কোমলমতি শিশুদেরকে ভিনদেশী অপসাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকারে পরিণত করবে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
এ সময় তারা আরো বলেন, বর্তমানে সামর্থবান অভিভাবকগণ ধর্মীয় শিক্ষার জন্য বাসায় প্রাইভেট শিক্ষকের ব্যবস্থা করলেও অধিকাংশের জন্য তা সম্ভব হয় না। অথচ শিশুদের মৌলিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অর্জনের ব্যবস্থা থাকার কথা ছিল। আমরা দাবি করছি, জনগণের করের টাকায় পরিচালিত এসব সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবশ্যই ধর্মীয় সহকারী শিক্ষক পদ সৃষ্টি করতে হবে। দাওরা ও কামিল উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে এই পদে নিয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যে নিয়োগ কমিটি ধর্মীয় শিক্ষক পদ সৃষ্টি না করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে আমরা তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
নির্বাহী বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরো বলা হয়, সম্প্রতি অভ্যুত্থানের পক্ষের একটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দলীয় প্রধানকে হত্যার উদ্দেশ্যে যে বর্বর হামলা চালানো হয়েছিল তা মেনে নেয়া যায় না। ভিডিও ফুটেজে স্পষ্টভাবে হামলাকারীদের পরিচয় শনাক্ত হলেও এখনো পর্যন্ত সরকার তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ওই ঘটনাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহন করতে হবে।
তারা আরো বলেন, আমরা দাবি করছি, গণভোট অথবা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে শক্তিশালী আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এর ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে হবে। পেশীশক্তি ও কালো টাকার প্রভাবমুক্ত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা নতুন বাংলাদেশে সকলের। ঘোষিত নির্বাচনী সময়সীমার আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান করতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, মাওলানা সাইয়্যেদ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, মাওলানা শেখ মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন, বায়তুলমাল সম্পাদক আলহাজ আবু সালেহীন, সমাজকল্যাণ ও শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান ফিরোজ, প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রিফাত হোসেন মালিক, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শায়খুল ইসলাম, যুব বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, মুফতি আবদুল হক আমিনী, জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, আলহাজ নুর হোসেন, হাফেজ নুরুল হক, মো: আবুল হোসেন, মাওলানা আজিজুল হক, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।