হাসিনার সময়ে হওয়া সব নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা’র দাবি এনসিপি’র

নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা না থাকায়, কমিশন পুনর্গঠনের দাবিও জানান এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

অনলাইন প্রতিবেদক
প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পর এনসিপি'র সংবাদ সম্মেলন
প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পর এনসিপি'র সংবাদ সম্মেলন |নয়া দিগন্ত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সাথে এক বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো- শেখ হাসিনার আমলে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনগুলোকে আইনগতভাবে অবৈধ ঘোষণা করা। এছাড়াও, নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা না থাকায়, কমিশন পুনর্গঠনের দাবিও জানান তিনি।

নাহিদ ইসলাম জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদদের পুনর্বাসনের ধীরগতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া দ্রুত ও সঠিকভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দ্রুত আয়োজনের মাধ্যমে নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবের ওপরও জোর দেন তিনি।

শনিবার (২৪ মে) যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব জানান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘উনি ক্ষমতা নিতে চাননি, আমরাই উনাকে ক্ষমতা দিয়েছি। উনি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু তিনি কাজ করতে গিয়ে অনেক বাধার সম্মুখীন হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। তবে আমরা উনাকে বুঝিয়েছি, উনি যেন সকল কিছু বাদ দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা সেটাকে লক্ষ্য রেখে যেন কাজ করে যান।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে একটা দাবি ছিল আমাদের যেটা ৩০ দিনের ভেতরে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, পাশাপাশি আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, জুলাই আন্দোলনে যারা আহত ও শহীদ হয়েছেন তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও ধীরগতির ছিল। আর এই আর্থিক বিষয়টা যেন সঠিকভাবে হয় সেই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা বলেছি।

তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখতে পারছি না। তাই এই নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন এর দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য দ্রুত আয়োজন করা হয় সে বিষয়ে দাবি জানিয়েছি। এর ফলে যে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে জনগণ যে দুর্ভোগ পৌঁছে সেটি সমাধান হবে।

তিনি বলেন, আরেকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, শেখ হাসিনার আমলে যে সকল নির্বাচন হয়েছিল সেগুলো নিয়ে বিতর্ক ছিল। তাই সেই পূর্বের নির্বাচনগুলোকে আইনগতভাবে অবৈধ ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে বলেছি।

তিনি বলেন, সর্বশেষ যে কথা হয়েছে তার মধ্যে ছিল হ্যালো সংস্কার এবং জুলাই অভ্যুত্থানের প্রোক্লেমেশনের বিষয়ে সরকার যেন একটি সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা করে।

নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যে এক সকল ছাত্র প্রতিনিধিরা উপদেষ্টা হয়েছেন তারা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। এ বিষয়ে আমরা আজকে স্পষ্ট করেছে। তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আজকে বলেছি উনি যেন দায়িত্বে থাকেন এবং দায়িত্বে থেকে গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি বাস্তবায়নের কাজ করেন।

এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস হতাশা ব্যক্ত করেছেন। উনি ক্ষমতা নিতে চাননি আমরাই উনাকে ক্ষমতা দিয়েছি। উনি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু তিনি কাজ করতে গিয়ে অনেক বাধার সম্মুখীন হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। তবে আমরা উনাকে বুঝিয়েছি, উনি যেন সকল কিছু বাদ দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা সেটাকে লক্ষ্য রেখে যেন কাজ করে যান।

নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, গণঅভ্যুত্থানে উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া ছাত্র প্রতিনিধিরা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন না, বরং তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে তার পদে বহাল থেকে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।