আগামী নির্বাচনে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজ ও দখলবাজ মুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন।
তিনি শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট মোড়ে ঢাকা-১২ সংসদীয় আসনের শের-ই-বাংলা নগর থানা দক্ষিণ আয়োজিত এক ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মহানগরী মজলিসের শূরা সদস্য ও শের-ই-বাংলা নগর থানা দক্ষিণ থানা আমির আবু সাঈদ মন্ডলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি তারিফুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও হাতিরঝিল অঞ্চল পরিচালক হেমায়েত হোসেন, শের-ই-বাংলা নগর দক্ষিণ থানার সাবেক আমির ও মৌলভীবাজার-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ও তেজগাঁও দক্ষিণ থানা আমির ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদী, অঞ্চল টিম সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লা, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক আ জ ম কামাল উদ্দিন, ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি হাফেজ আবু তাহের, মহানগরী উত্তরের সভাপতি রেজাউল করিম শাকিল, জামায়াতের শিল্পাঞ্চল থানা আমির কলিম উল্লাহ, জামায়াত নেতা এস এম মনির আহমেদ, মোহাম্মদ উল্লাহ ভূইয়া হারুন, রাশেদুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের তেজগাঁও কলেজ সভাপতি এজাজ আহমেদ, হাতিরঝিল সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, তেজগাঁও কলেজ সভাপতি মেহেদী হাসান প্রমুখ।
সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, জুলাই বিপ্লব কোনো দল বা গোষ্ঠীর নয় বরং এ বিজয় ছাত্র-জনতাসহ আপামর জনসাধারণের। তাই এ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছিলো। বিপ্লবোত্তর প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার, জুলাই গণহত্যাকারীদের বিচারের পর একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও মহল বিশেষের হঠকারিতার কারণেই অন্তর্বর্তী সরকার সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। প্রধান উপদেষ্টা ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা নির্বাচন জাতিকে উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এর কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। কারণ, সম্প্রতি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গেজেট প্রকাশ করা হলেও একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের ঘোষণায় জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। ফলে জুলাই বিপ্লবই ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কিন্তু সচেতন ছাত্র-জনতা এসব ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেবে না। তিনি প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার, জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে সরকারের সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনা করে সংসদ নির্বাচনের আগেই গণভোটের পর সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানান। অন্যথায় জুলাই বিপ্লব হাতছাড়া হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব এমনিতেই হয়নি বরং এজন্য প্রায় দুই হাজার মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তাই এদেশের মানুষ আর অপশাসন-দুঃশাসন ও স্বৈরাচারি-ফ্যাসিবাদী শাসনে ফিরে যেতে চায় না। কারণ, তারা স্বাধীনতার পর সুশাসন ও জনগণের ভাগের পরিবর্তনের নামে লুটেরাদের লুটপাট ও লাগামহীন জুলুমবাজী দেখেছে। তাই তারা এখন পরিবর্তন চায়। দেশের মানুষ এখন আর পুরাতন প্রতীকে ভোট দিয়ে নতুন করে প্রতারিত হতে চান না। কারণ, তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, অতীতের শাসকরা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনের কথা বলে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করে নিয়েছে। তাই তারা এখন দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের অনুকূলে গণজোয়ার সৃষ্টি নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে শরীক হতে চায়। তিনি দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র, দুর্নীতি ও ঘুষ করে করে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে সকলকে দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে ময়দানে আপোসহীন থাকার আহ্বান জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, মহল বিশেষ জুলাই বিপ্লবকে ব্যর্থ করার জন্য নানা ফন্দি-ফিকির শুরু করেছে। নিজেদের পছন্দমত লোক দিয়ে প্রশাসন সাজানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই আগামী নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রশাসন থেকে দলবাজদের তাড়িয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ লোকদের দিয়ে জনপ্রশাসন পুনর্গঠন করতে হবে। জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি দিতে একই দিনে নয় বরং সংসদ নির্বাচনের আগেই গণভোট এবং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করতে হবে। তিনি আগামী দিনে আত্মমর্যাদাশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সারাদেশে জামায়াত প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহবান জানান।



