দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফেরত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জামায়াতকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘মহান আল্লাহ তায়ালার খাস মেহেরবাণীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লাসহ নিবন্ধন আদালতের রায়ের সূত্রে আজকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আমরা অফিসিয়ালি ফিরে পেলাম। এ জন্য মহান রব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রাণ খুলে তৃপ্তির সাথে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা সমাজের সচেতন, বিবেকবান মানুষ। আপনাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের চিন্তা-চেতনা, মন-মানসিকতা, রাজনীতিকরণ, ভোটাধিকারসহ সবকিছুর অভিব্যক্তি ও আকাঙ্ক্ষা জাতির কাছে দেশ-বিদেশে প্রতিফলিত হয়। এ জন্য আপনাদেরকে বলা হয় জাতির বিবেক। কিভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মতো একটি গণতান্ত্রিক নিয়মতান্ত্রিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ওপর পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার জুলুম চালিয়েছিল, আমাদের অধিকারগুলো কিভাবে কেড়ে নিয়েছিল সব ইতিহাস দেশবাসীর জানা আছে। আপনাদেরকে জানাতে চাই, ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের নিবন্ধন আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে বৈধভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধিত হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর আদালতের মাধ্যমে আমাদের এই অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালের একটি রিট পিটিশনের সূত্র ধরে ২০১৮ সালে আদালতের এক আদেশে আমাদের নিবন্ধন বাতিল করেছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ আইনি লড়াই-সংগ্রাম করেছি। অবশেষে আপনারা জানেন, চলতি মাসের ১ জুন হাইকোর্টের সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমরা আমাদের সেই অধিকারকে ন্যায্যভাবে ফিরে পেয়েছি এবং সেই আদেশের ভিত্তিতে আজ নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আমাদের সেই নিবন্ধন দলীয় প্রতীকসহ ফেরত প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ফেরত দেয়া হলো।’
তিনি বলেন, ‘এই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে আমাদের অধিকার কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক এবং আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য এই আইনি লড়াইয়ে আমাদের দেশের বরেণ্য আইনজীবীরা সহযোগিতা করেছেন; গণমাধ্যমের কর্মীরা সহযোগিতা করেরেছন। ন্যায় ও ইনসাফের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করে জাতির সামনে আপনারা বিবেককে কাজে লাগিয়ে সাংবাদিকতার পেশার মহত্ত্বকে আপনারা তুলে ধরেছেন এবং বহাল রেখেছেন- সে জন্য আপনাদের সকলকে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমি আবারো সর্বোপরি মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে বার বার শুকরিয়া আদায় করছি। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য দোয়া করেছেন, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশে-বিদেশে সকল সুধী, শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রবাসী ও দেশের সকল মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’ বিজ্ঞপ্তি