ড. আহমদ আবদুল কাদের

আগামী নির্বাচিত সরকারের সংস্কার পূর্ণ করা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে

‘আমরা অবিলম্বে উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান, ফ্যাসিবাদী দল ও দোসরদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’

নিজস্ব প্রতিবেদক
৬ দাবিতে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ
৬ দাবিতে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ |ছবি : নয়া দিগন্ত

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছিল ফ্যাসিবাদীদের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য। কিন্তু আমরা দেখলাম সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু বিষয় পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের হাতে ছেড়ে দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি এখনো সাধিত হয়নি। জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এখনো ঘোষণা হয়নি। অথচ খুনি ফ্যাসিবাদী হাসিনা ও তার দোসরদের দ্রুত বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কাদের আরো বলেন, ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন পক্ষ ছাড় দিয়ে হলেও অনেকগুলো বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। এখন যদি সংস্কার পূর্ণাঙ্গ না করা যায় তাহলে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যারা আসবেন তারা এসব বিষয় যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবে কিনা সে বিষয়ে অতীত অভিজ্ঞতার কারণে জনমনে সন্দেহ রয়েছে। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ বাস্তবায়নের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। অতি দ্রুত জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ ঘোষণা করে তা কার্যকর করতে আইনি ভিত্তি প্রদান করতে হবে এবং জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর ভিত্তিতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা লক্ষ্য করলাম অন্তর্বর্তী সরকার জনপ্রত্যাশার বিপরীতে গিয়ে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গান-নাচের শিক্ষক নিয়োগে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে গেজেট প্রকাশ করেছে। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি দীর্ঘদিনের। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আমরা অবিলম্বে উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান, ফ্যাসিবাদী দল ও দোসরদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ ৬ দফা দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী শাখা এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল আয়োজন করে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল জলিল।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন ও উত্তর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা আহমদ বিলাল, মাওলানা নজরুল ইসলাম মাজহারী, মাওলানা ফিরোজ আহমদ, হাফেজ কবির আহমদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস সেক্রেটারি জেনারেল জাকারিয়া হোসাইন জাকির, শ্রমিক মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমান প্রমুখ।