অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।
শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি প্রথম থেকেই একটি একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে আসছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী পারিবারিক, রাজনৈতিক ও ব্যাক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, এজন্য আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি সবচেয়ে বেশি বিএনপি'র। এই বিচারপ্রক্রিয়া কোনোভাবে অসম্পন্ন থেকে গেলে বিএনপি সরকারের দায়ীত্বে গেলে বিচারের আওতায় এনে তা স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করবে।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে যে- অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে- একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র উত্তরণের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা। যেকোনো উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে আমরা মনে করি জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার পুনরায় ফিরে আসার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর দায় বর্তমান সরকার এবং তাদের সাথে সংশ্লিষ্টদের উপরে বর্তাবে। বিএনপি কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি, বরঞ্চ প্রথম দিন থেকেই এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা আশা করছি, এই সরকার ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা সংস্কার প্রস্তাব দেবে। সেটি চলমান থাকবে। আমরা ক্ষমতায় এলে সেই চলমান সংস্কার বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা করবো। মামলাগুলোর ব্যাপারে আমাদের জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আমাদের নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি ভিক্টিম। ফ্যাসিস্ট সরকারের কর্তা ব্যক্তি যারা দায়ী, তাদের বিচার তো আমরা চাচ্ছি। আমরা তো বিচারের পক্ষে তবে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এই বিচার করবে। এই বিচার দিন-তারিখ ঠিক করে সম্ভব নয়। যে বিচার সম্পূর্ণ না হবে ক্ষমতায় গেলে সেগুলো বিচারের আওতায় এনে সম্পূর্ণ করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনের রোডম্যাপ বিষয়ে স্পেসিক কোনো আলোচনা হয় নাই, জানান নাই। আমরা দাবি করেছি। হয়তো বা উনারা প্রেসের মাধ্যমে জানাবেন, আমরা অপেক্ষায় আছি। উনারা জানানোর পরে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাবো।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ডিসেম্বরে আগেও নির্বাচন করা সম্ভব, এ আলোচনাও হয়েছে।
সালাহ উদ্দিন আহমদ আবার বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও দু’জন ছাত্র উপদেষ্টার ও যাদের কারণে এ সরকারের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আজকেও আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি প্রধান উপদেষ্টাকে। সেইটা উনারা দেখবেন।
প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিএনপি প্রতিনিধি দলের বৈঠকটি ঘণ্টাব্যাপী ধরে চলে।