প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিতে বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদল। বিকেল ৪টার পর থেকে এ বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, এই বৈঠকে বিএনপি-জামায়াতসহ ২৮টি রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
বিকেল পৌনে ৪টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রবেশ করে। অন্য সদস্যরা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
সূত্র জানিয়েছে, জামায়াতের নায়েব আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ আবু তাহের, হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান; এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার; এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ; গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর; জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস; ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান; জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি এবং খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কমিশনের আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে একদিন এবং ঈদের পরে দলগুলোর ধারাবাহিকভাবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা চলবে। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার কমিশনের যেসব মৌলিক প্রস্তাবে এখনো ঐকমত্য হয়নি সেগুলো এ পর্বে বেশি গুরুত্ব পাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের।
গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচারবিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়। সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি প্রস্তাব ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে মতামত নেয় কমিশন। এরপর গত ২০ মার্চ থেকে দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে প্রথম পর্বের আলোচনা শুরু হয়। প্রথম পর্বের আলোচনা শেষ হয় ১৯ মে। প্রথম দফায় মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সাথে ৪৫টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
পরে ২৬ মে ঐকমত্য কমিশন সংবাদ সম্মেলন করে প্রথম ধাপের আলোচনার অগ্রগতি তুলে ধরে। প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে এবং যেগুলোতে ঐকমত্য হয়নি, এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বা সুপারিশের কথা সেদিন সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।