সাধারণ নির্বাচনের আগে গণভোট মানতে নারাজ বিএনপি

আমাদের অবস্থান একেবারেই পরিষ্কার। প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে হতে হবে। ঐকমত্যের বাইরে কেউ কিছু সুপারিশ করলে সেটা তাদের ব্যাপার, আমাদের নয়। বিএনপি যে বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে না, সেখানে অন্য কারো প্রস্তাব কার্যকর হতে পারে না।

অনলাইন প্রতিবেদক
বিএনপির লোগো
বিএনপির লোগো |ইন্টারনেট

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারকে সাধারণ নির্বাচনের আগে গণভোটের সুপারিশ করেছে- এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি যে বিএনপির অবস্থান অপরিবর্তিত। জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে, দু’টি ব্যালটে অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যে প্রস্তাবই দিক, সেটা তাদের মতামত- বিএনপির নয়।

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান একেবারেই পরিষ্কার। প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে হতে হবে। ঐকমত্যের বাইরে কেউ কিছু সুপারিশ করলে সেটা তাদের ব্যাপার, আমাদের নয়। বিএনপি যে বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে না, সেখানে অন্য কারো প্রস্তাব কার্যকর হতে পারে না।

আজ মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন অফিসে ঢাকায় অবস্থানরত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সাথে বৈঠকে শেষে সাংবাদিকদের আমীর খসরু এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে উনারা (ইউকে) জানতে চেয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন। আমরা বলেছি, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উনার (তারেক রহমান) নিজের। তিনি সঠিক সময়ে, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দেশে ফিরবেন- দিনক্ষণ উনি নিজেই ঘোষণা করবেন।

আমীর খসরু বলেন, আলোচনায় মূলত উঠে এসেছে, সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের প্রস্তুতি কতটা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি কোথায় এবং একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রশ্নটি। সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রেক্ষাপট। আমরা বলেছি, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মানুষ একটি দাবিতেই ঐক্যবদ্ধ- তা হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাবে শেখ হাসিনা বার বার ক্ষমতা দখল করেছেন। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার আছে, এটি কোনো দলীয় সরকার নয়। তবে এর ভেতরেও কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি রয়েছেন, যাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে- শুধু বিএনপি নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাই এই কাঠামোর ভেতরে থাকা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডগুলো পুনর্মূল্যায়ন করার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, যদিও অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবে, তবুও সেটিকে তত্ত্বাবধায়ক আদলে পরিচালনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়ার সাথে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সরাসরি সম্পর্কিত। কারণ নির্বাচন কমিশনই নির্বাচনের সব দায়িত্ব পালন করবে। তাই কমিশনকে কার্যকর ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাটিকেই সামনে আনতে হবে।

তিনি বলেন, আজকের আলোচনায় আরো এসেছে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা। ইউকে সরকারের সাথে ইউএনডিপির সহযোগিতায় তারা বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সংস্কৃতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভূমিকা- এসব বিষয়ও আলোচনায় এসেছে।