পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশবাসীকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের শুভেচ্ছা

‘ঈদুল আজহা আমাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভের সুযোগ করে দেয়। আমরা যদি বাস্তব জীবনে ইসলামী আদর্শ অনুসরণ করে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করতে পারি, তাহলেই কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হবে।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন

Location :

Dhaka City
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশবাসীকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের শুভেচ্ছা
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশবাসীকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের শুভেচ্ছা |নয়া দিগন্ত

ত্যাগের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শোষণমুক্ত ও তাকওয়া ভিত্তিক সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়ে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা মহানগরসহ দেশবাসী ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

মঙ্গলবার (৪ জুন) এক যৌথ শুভেচ্ছা বার্তায় তারা বলেন, ‘পশু কোরবানিকে আল্লাহ ওয়াজিব করেছেন, দ্বীন কায়েমের জন্য জান ও মাল কোরবানিকে আল্লাহ ফরজ করেছেন। ত্যাগ ও কোরবানির প্রেরণা নিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা আমাদের মাঝে সমাগত। এই ঈদ শুধুমাত্র ত্যাগের চেতনাকেই উজ্জীবিত করে না, সেই সাথে সমাজে অনৈক্য ভুলে গিয়ে পরস্পরের ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বন্ধনকে আরো মজবুত করে। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ:) আল্লাহর রাহে ত্যাগ ও কোরবানির মহাপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ফলে তার স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে জীবনের সকল ক্ষেত্রে ঈমানি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্যেই আল্লাহ তা’য়ালা মুসলিম মিল্লাতের ওপর কিয়ামত পর্যন্ত এ কোরবানিকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। যাতে প্রতিটি মুসলমান তার নফসের ওপর বিজয়ী হয়ে নিজের প্রিয় বস্তু, ধন-সম্পদ, চিন্তা-চেতনা আল্লাহর রাহে কোরবানি করে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে পারে। কোরবানির মূল শিক্ষাই হলো নিজের অহংবোধকে বিসর্জন দেয়া এবং সেই সাথে আল্লাহর দেয়া বিধি-নিষেধ পালন করে পরিপূর্ণ ত্বাকওয়াবান মুমিন হওয়া।’

পশু কোরবানির মতোই ইক্বামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে নেতৃদ্বয় বলেন, ‘ইক্কামতে দ্বীন বলতে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামের ফরজ বিধানগুলো প্রতিষ্ঠা করা এবং তা মেনে চলা। ইক্বামতে দ্বীন শুধুমাত্র কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাতকে বোঝায় না। এটির চূড়ান্ত রূপ ও পরিপূর্ণ বিকাশ হচ্ছে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, কোরআনের বিধান প্রবর্তন করা।’

নতুন বাংলাদেশে ইক্কামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় দলমত-ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে দেশবাসীর প্রতি তারা আহ্বান জানান।

জামায়াত নেতারা আরো বলেন, ‘দেশবাসী এবার এমন একটি সময়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে যাচ্ছে, যখন আওয়ামী অপশাসনের পতনের পর দেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্ন পূরণে সবাইকে জনগণের প্রত্যাশার পক্ষে দাঁড়ানো অত্যাবশ্যক। ছাত্র-জনতার জীবন ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশের সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে, কেবল নির্বাচন হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরন হবে না। বরং পরাজিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে।’

সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি বন্ধ করে এবং আধিপাত্যবাদের সঙ্গ ছেড়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়তে নেতারা সব দল ও মতের প্রতি আহ্বান জানান।

তারা আরো বলেন, ‘পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেন- ‘বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে।’ তাই ঈদুল আজহা আমাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভের সুযোগ করে দেয়। আমরা যদি বাস্তব জীবনে ইসলামী আদর্শ অনুসরণ করে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করতে পারি, তাহলেই কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হবে।’

নেতারা হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে নগরবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সেই সাথে তারা আবারো ঢাকা মহানগরীসহ দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান এবং সবাইকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রেখে স্বাস্থ্য সচেতনতার সাথে যথাযথ মর্যাদায় ঈদুল আজহা উদযাপন করতে অনুরোধ করেন।