জামায়াতের সুধী সমাবেশে ডা: শফিকুর রহমান

জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান ও রাসূলের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে

‘জামায়াত দেশে প্রচলিত নেতিবাচক রাজনীতির পরিবর্তে নতুন ধারার ইতিবাচক রাজনীতির প্রবর্তন করতে চায়।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন

Location :

Dhaka City
জামায়াতের সুধী সমাবেশে ডা: শফিকুর রহমান
জামায়াতের সুধী সমাবেশে ডা: শফিকুর রহমান |নয়া দিগন্ত

‘জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে’ উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াত দেশে প্রচলিত নেতিবাচক রাজনীতির পরিবর্তে নতুন ধারার ইতিবাচক রাজনীতির প্রবর্তন করতে চায়।’

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর তালতলার হালিম ফাউন্ডেশন স্কুল প্রাঙ্গনে কাফরুল দক্ষিণ থানা আয়োজিত ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আমির উপাধ্যক্ষ আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আবু নাহিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ শাহ আলম তুহিন, জামায়াত নেতা সালাউদ্দিন শাহীন, জাকির হোসেন, রুহুল আমীন, আবু সাঈদ খুদরি ও ছাত্রশিবিরের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম শাখা সভাপতি রেজাউল করিম প্রমূখ।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের কোন বিকল্প নেই। আর সে লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তাই আমরা কারো বিরুদ্ধে কথা বলা পছন্দ করি না বা বলিও না। আমরা শুধুই আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলি। দেশ ও জাতিকে নিয়ে আমরা যে স্বপ্ন দেখি, আমরা তা-ই বাস্তবায়ন করতে পদ্ধপরিকর। মূলত, এ জমিন ও আসমান আল্লাহর সৃষ্টি। বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছুই সৃষ্টি করা হয়নি। বস্তুত, আমাদেরকে আল্লাহর খলিফা হিসাবে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছে। পবিত্র কালামে হাকীমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি জীন ও মানুষকে শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি’। তাই জীবনের কোন ক্ষেত্রেই আমাদের পক্ষে আল্লাহর হুকুমের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই’। তিনি বাস্তবজীবনে আল্লাহর বিধান পুরোপুরি মেনে চলার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাদেরকে তার বিধান অনুযায়ী চলার নির্দেশ দিয়ে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। এর বাইরে যাওয়া আমাদের কোনো সুযোগ নেই। আমাদের দায়িত্ব হলো পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনসহ জাগতিক পরিসরের সকল ক্ষেত্রে সে মহান স্বত্ত্বার গোলামী করা। কিন্তু প্রশ্ন আসতে পারে, শুধুমাত্র আল্লাহর গোলামী বা ইবাদাত-বন্দেগীর মাধ্যমেই ব্যক্তির জীবন পরিচালনা করা কি সম্ভব ? হ্যাঁ অবশ্যই সম্ভব। আল্লাহর হুকুম মেনে দুনিয়াবী জিন্দেগীতে যা কিছুই করা হোক না কেন সবই ইবাদতের মধ্যে গণ্য হবে। কিন্তু হুকুমের বাইরে কেউ যদি ইচ্ছামত নামাজের রাকাতের হ্রাস-বৃদ্ধি করে তাহলে নামাজও আল্লাহর ইবাদত হিসাবে গণ্য হবে না বরং তা হবে রীতিমত আল্লাহর অবাধ্যতা’।

তিনি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহর বিধান ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘মূলত, জুলাই বিপ্লব আমাদেরকে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারি, ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়াতান্ত্রিক অপশাসন- দুঃশাসন থেকে মুক্তি দিয়েছে। তাই আমাদেরকে এ বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করেই আগামী দিনের কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে। মূলত, স্বৈরাচার কর্তৃক ধ্বংস করে দেয়া রাষ্ট্রীয় কাঠামোর কার্যকর সংস্কার এবং গণহত্যাকারীদের বিচারের দৃশ্যমান হওয়ার পর অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এখন সময়ে দাবি। এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলো। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি থেকে তারা সরে আসছে বলেই মনে হচ্ছে। তারা একটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে বিশেষ গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে চায়। কিন্তু তা কোনোভাবেই জনগণ তা মেনে নেবে না বরং গণদাবি আদায়ের মাধ্যমেই নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করবে।’