আলোচনা ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের তত্ত্বাবধানে দেয়া সঠিক হবে না : খেলাফত মজলিস

‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্য কোনো কমিশন এত বিতর্কে না জড়ালেও নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন সরাসরি ইসলামের মৌলিক বিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের হৃদয়ে আঘাত দিয়েছে ‘

নয়া দিগন্ত অনলাইন
খেলাফত মজলিসের নির্বাহী কমিটির সভা
খেলাফত মজলিসের নির্বাহী কমিটির সভা |সংগৃহীত

খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় নেতৃবৃন্দ উদ্বেগের সাথে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে আলোচনা ছাড়া মিয়ানমারে মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের তত্ত্বাবধানে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ সরকারের জন্য সঠিক হবে না। কারণ এর সাথে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থ জড়িত আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বনাম রাজনৈতিক দল ও জনগণকে পরস্পর মুখোমুখী দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চলছে। দায়িত্বশীল পর্যায়ে থেকে সকলকে আরো পারস্পরিক সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

তারা আরো বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্য কোনো কমিশন এত বিতর্কে না জড়ালেও নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন সরাসরি ইসলামের মৌলিক বিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের হৃদয়ে আঘাত দিয়েছে। চরম বিতর্কিত এই কমিশন ও তাদের প্রস্তাবনাসমূহ বাতিলে কালক্ষেপণ সরকারের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। কারণ, উক্ত কমিশন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থায় মারাত্মক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সূত্রপাত ঘটাতে চায়।’

‘জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করার ফ্যাসিবাদী শাসনামলের পুরোনো বয়ান গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আবারো উচ্চকিত হচ্ছে। দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক শক্তিসমূহের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী বাংলাদেশ বিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শক্তিকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আরো সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারসহ সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নের লক্ষ্যে এবারের বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ প্রসঙ্গ খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে ফ্যাসিবাদী দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন সময় হচ্ছে, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার। শাপলা গণহত্যার কমিশন গঠন করে অবিলম্বে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনী সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা দেয়ার জন্য আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’

বুধবার সন্ধ্যায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ নির্বাহী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ। মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত নির্বাহী বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা সাইয়্যেদ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: রিফাত হোসেন মালিক, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শায়খুল ইসলাম, যুববিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আবু মুসায়্যিব, সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, নুর হোসেন, মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, মাওলানা ফারুক আহমদ ভূঁইয়া, আবুল হোসেন, আমির আলী হাওলাদার, অ্যাডভোকেট মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।