নুরের ওপর হামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি ডা. তাহেরের

ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং দেশ ও জাতিসত্ত্বাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বক্তব্য রাখছেন ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
বক্তব্য রাখছেন ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের |ফাইল ছবি

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

শনিবার ঢাকার মগবাজারস্থ আলফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত থানা আমির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি জানান তিনি।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আ. রহমান মূসা, দক্ষিণের নায়েবে আমির আ. সবুর ফকির প্রমখ।

ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন হলেও তাদের প্রতিভূরা এখন সক্রিয় রয়েছে। তারা জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং দেশ ও জাতিসত্ত্বাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তাই এ ঘৃণ্য হামলার দায়িদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

তিনি ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান। অন্যথায় বিপ্লব হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, ‘মূলত, বর্তমান সরকার ১৮ কোটি মানুষের সমর্থনের সরকার। তারা ক্ষমতায় আসার পর সংস্কার ও বিচারের পর নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই তারা রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে মতবিনিময়ও করেছেন। জামায়াত মতবিনিময়ে অংশ নিয়ে আন্তরিকতার সাথে সাথে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনেক বিষয়েই ঐকমত্য হয়েছে। কিন্তু একটি বড় রাজনৈতিক দল এসব সংস্কারকে সাংবিধানিক বা আইনগত ভিত্তি দিতে চায় না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতার জন্যই রাষ্ট্রীয় সংস্কারগুলোকে সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে হবে।’

তিনি অতীতের নির্বাচনের নামে প্রহসনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা অতীতের মতো হাসিনা মার্কা নির্বাচন চাই না। নির্বাচন হতে হবে অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য।’

ডা. তাহের নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে পুরোপুরি অনুসরণ করতে হবে। এর অন্যথা হলে বিপ্লবীরা ঘরে বসে তামাশা দেখবে না। কারণ, তারা এখনো ঘরে ফিরে যাননি। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজন হলে তারা আবারো রাজপথে নামবে এবং প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আদায় করেই ছাড়বে। আর এ দাবি কোনোভাবেই পাশ কাটাতে দেয়া হবে না।’

তিনি বিদেশী শক্তির দালালদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যেখানেই থাকুক না কেন জনগণ দালালদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’

তিনি নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রচলিত পদ্ধতির নির্বাচনের জনমতের পুরোপুরি প্রতিফলন হয় না। তাই আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিই হতে হবে।’

সেলিম উদ্দিন পিআর পদ্ধতি নির্বাচন করার জন্য আরপিও সংশোধন ও গেজেট নোটিফিকেশন জারি করতে নির্বাচন কমিশনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি