ড. মঈন খান

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে উদিত গণতন্ত্রের সূর্যকে অস্তমিত হতে দেয়া যাবে না

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বয়ং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিলেন।

অনলাইন প্রতিবেদক
‘জুলাই বিপ্লব : গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক সেমিনারে ড. মঈন খান
‘জুলাই বিপ্লব : গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক সেমিনারে ড. মঈন খান |নয়া দিগন্ত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে উদিত গণতন্ত্রের সূর্যকে অস্তমিত হতে দেয়া যাবে না।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে ‘জুলাই বিপ্লব : গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে হিউম্যান রিচার্চ এন্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশন।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সূর্য নতুন করে উদয় হয়েছে। এই উদীয়মান গণতন্ত্রের সূর্যকে আর কখনো বাংলাদেশে অস্তমিত হতে দেয়া যাবে না।

জুলাই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই -এর প্রতিটি যোদ্ধার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা। তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজেরা জীবন দিয়ে সমগ্র জাতিকে একটি ফ্যাসিস্ট রেজিম থেকে উদ্ধার করে জাতিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে সাহায্য করেছেন।

ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা ও সততার জন্য সুপরিচিত ছিলেন। বাবার মুখ থেকে শোনা শহীদ জিয়াউর রহমানের একটি ঘটনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি সভায় শহীদ জিয়াউর রহমান সকাল ১০টায় গিয়ে দেখেন যে- আয়োজকদের কয়েকজন ছাড়া অন্য কোনো অতিথি উপস্থিত হননি। তখন তিনি মাইক নিয়ে খালি টেবিলে নিজেই তার বক্তব্য সময় মতো দিয়ে চলে যান- এই বলে যে- কে এলো বা না এলো তা তার দেখার বিষয় নয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনীতি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে উল্লেখ করেন তিনি।

মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে ‘অখ্যাত মেজর’ বলে সমালোচনা করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ উপলব্ধি করতে পারেনি যে- এই ‘অখ্যাত মেজর’ই নিজের এবং বেগম খালেদা জিয়ার জীবন বিপন্ন করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ এই উদারতা বুঝতে পারেনি যে- শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বয়ং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিলেন। উদারতা হলো বিএনপির সবচেয়ে বড় গুণ। তিনি বিএনপিকে একটি সেন্ট্রিস্ট বা মধ্যপন্থী দল হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যারা কোনো চরম ডান বা বামপন্থী নয়। বাংলাদেশের মানুষও এই মধ্যপন্থী নীতি পছন্দ করে এবং কোনো চরম নীতি অনুমোদন করে না।

তিনি বিএনপির উপর আওয়ামী লীগের অত্যাচারের কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিএনপিকে নির্যাতন, অত্যাচার ও জুলুমের শিকার হতে হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ বিএনপির বিরুদ্ধে এক লাখেরও অধিক মামলা দিয়েছে এবং ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে; দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান থেকে শুরু করে গ্রামের নিরীহ ছাত্র পর্যন্ত, শেখ হাসিনার নিষ্ঠুর পুলিশ বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত ও অত্যাচারিত করেছে। পুলিশের ভয়ে আমাকে ভাওয়ালের গজারিবন এবং ধানের ক্ষেতে রাত কাটাতে হয়েছে।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা কলেজের অধ্যাপক মো: আনোয়ার মাহমুদ। এতে আরো বক্তৃতা করেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এফ রহমান হলের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো: মুস্তাফিজুর রহমান সেগুন প্রমুখ।