ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে জাতি শাসক নয়, সেবক পাবে।’
শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রমনা থানার উদ্যোগে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনগণের প্রতিনিধি শাসক হয় না, সেবক হয়। জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকে। যার কারণে আজ পর্যন্ত কোনো ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার ফ্যাসিবাদ হয়ে উঠতে পারেনি, পারবে না। কারণ ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালিত হয় আল্লাহর আইনে। আল্লাহর আইনে জনগণকে শোষণ করা যায় না, জনগণের সেবা করতে হয়। মানুষের তৈরি আইনে জনগণকে সেবার নয় শোষণ করা হয়।’
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘যারা নিজস্ব তৈরি আইনে জনগণকে শোষণ করতে চায়, তারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করছে। তারা জনগণকে ভয়ভীতি লাগাচ্ছে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে মানুষের হাত কেটে ফেলবে, নারীদেরকে ঘরে বন্দী করে রাখবে, কিন্তু না জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে। ইসলামী রাষ্ট্রে কেউ চুরি করলে চোরের হাত কেটে দেয়ার বিধান।’
তাহলে চুরি না করলে ভয়ের কারণ কী— প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের কাজই ছিল জনগণের সম্পদ চুরি করা! দেশের সম্পদ চুরি করে তারা বিদেশে পাচার করেছে। তারা আবারো ক্ষমতায় এলে একই কাজ করবে। জামায়াত ক্ষমতায় এলে জনগণের ভয়ের কারণ নাই, চোরদের ভয়ের কারণ রয়েছে। নারীদের ঘরে বন্দী করে রাখা ইসলামীর বিধান নয়। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নারীও অংশগ্রহণ করতে পারে এবং বাংলাদেশেও করবে।’
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ইসলামী ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেল নির্বাচিত হয়ে ডাকসু’র নেতৃত্ব দিচ্ছে। সেখানে নারী-পুরুষ বা ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে কোনো বৈষম্য করা হচ্ছে না। ছাত্রীদের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, অধিকার ও সুরক্ষায় ডাকসু যেভাবে ভূমিকা রাখছে একইভাবে জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।’
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উদ্দেশে বলেন, ‘যারা বলে ক্ষমতায় গিয়ে এই করবে-সেই করবে, তারা মনে হয় বিগত সময়ে কখনো ক্ষমতায় ছিল না! এদেরকে আর সুযোগ দেয়া যায় না। ভোটের মাধ্যমেই এদেরকে বয়কট করতে হবে।’
সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগরীর সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন বলেন, ‘সৎ নেতৃত্ব না থাকলে কখনোই সমাজ পরিবর্তন করা যায় না, যাবে না। সমাজ পরিবর্তনের জন্য দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, সৎ ও আদর্শিক নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে হবে।’
মহানগরীর মজলিসে শূরা সদস্য ও রমনা থানা আমির মো: আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মো: ফারুক হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে রমনা থানা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ওয়ারী থানার (৪১ নম্বর ওয়ার্ড) উদ্যোগে শনিবার স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে এক মতবিনিময় সভা (উঠান বৈঠক) অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি (ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী) ড. আব্দুল মান্নান। ওয়ারী দক্ষিণ থানা আমির মো: মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং থানা অফিস সেক্রেটারি মোফাজ্জল করিম বাবুর পরিচালনায় স্থানীয় সুপার হোটেল লিমিটেডে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা মীর বাহার আমীরুল ইসলাম। এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগরীর মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা নেসার উদ্দিন। এসময় ওয়ারী পূর্ব থানা আমির মুতাসিম বিল্লাহসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সবুজবাগ দক্ষিণ থানার উদ্যোগে শনিবার বিকেলে রাজারবাগ অভয় বিনোদিনী স্কুলে নারীদের নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৯ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কবির আহমদ। থানা আমির মাওলানা আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে এবং থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আনোয়ার হোসেন দুলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সবুজবাগ দক্ষিণ থানা নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, স্থানীয় মুরুব্বী হাজী জামাল, শহিদুল্লাহ সরকার, ৫ পূর্ব ওয়ার্ডের সভাপতি শাহজাহান সরদার, থানা সেক্রেটারি ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী কামরুল হাসান রিপন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি