সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথমবারের মতো জাতীয় সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (১৯ জুলাই) বিকালে উদ্যানে জড়ো হওয়া লাখো নেতা-কর্মীদের উপস্থিতির খবর এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়ও।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে ঢাকায় বিশাল সমাবেশ করেছে বাংলাদেশে বৃহত্তম ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামী। শনিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এ মহাসমাবেশে অংশ নিয়েছে দলটির লাখো সমর্থক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর আগামী বছর বাংলাদেশ নির্বাচন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, সব গণহত্যার ন্যায়বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের সাথে সম্পর্কিত একটি সনদের ঘোষণা ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য সাত দফা দাবি পেশ করেছে জামায়াত।
দলটি বলেছে, নির্বাচন ব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি আনতে হবে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, সমাবেশের আগের রাতেই হাজার হাজার সমর্থক অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। শনিবার সকাল থেকে প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছান।
সমাবেশে অংশ নিয়ে ৪০ বছর বয়সী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমরা এখানে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এসেছি। যেখানে ইসলাম হবে শাসনব্যবস্থার মূলনীতি, সৎ ও যোগ্য মানুষ দেশ পরিচালনা করবে, থাকবে না কোনো দুর্নীতি।’
সমাবেশে অনেককেই দেখা যায় দলের লোগোযুক্ত টি-শার্ট ও হেডব্যান্ড পরে থাকতে। অনেকে বুক পকেটে গেঁথেছেন দলীয় প্রতীক ‘তুলাদণ্ড’ আকৃতির ব্যাজ। তরুণদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
২০ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মহিদুল মোরসালিন সায়েম বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর অধীনে বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমরা পবিত্র কুরআনের আদর্শে চলি। সব ইসলামি দল এক হলে কেউ আমাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না।’
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের সংগ্রাম ছিল ‘ফ্যাসিবাদ’ নির্মূল করার জন্য। কিন্তু এবার দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আরেকটি লড়াই হবে।
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে? আরেকটি লড়াই হবে। আমরা যা যা প্রয়োজন তাই করব এবং সেই লড়াইয়ে জয়ী হব।’