বাউফলে নারী সমাবেশে ড. মাসুদ

ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারীর স্বাধীনতা, অধিকার ও মর্যাদা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত হবে

‘ইসলাম ব্যতীত কোনো ধর্ম, কোনো বিধান নারীদের সম্মানিত এবং মর্যাদাবান করেনি। আল্লাহর আইনে নারী-পুরুষ কিংবা ধর্ম বর্ণের কোনো বৈষম্য নেই। আল্লাহর আইনে মানুষ হিসেবে সকলেই সমান।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বাউফলে নারী সমাবেশে ড. মাসুদ
বাউফলে নারী সমাবেশে ড. মাসুদ |নয়া দিগন্ত

পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারীদের স্বাধীনতা, অধিকার ও মর্যাদা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে।’

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার নিশ্চিয়তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসলাম ব্যতীত কোনো ধর্ম, কোনো বিধান নারীদের সম্মানিত এবং মর্যাদাবান করেনি। আল্লাহর আইনে নারী-পুরুষ কিংবা ধর্ম বর্ণের কোনো বৈষম্য নেই। আল্লাহর আইনে মানুষ হিসেবে সকলেই সমান। তাই ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর বৈষম্য দূর করতে হবে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যতীত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়।’

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মাসুদ এসময় আরও বলেন, ‘আল্লাহর জমিনে আইন চলবে আল্লাহর। মানব রচিত আইনে শান্তি প্রতিষ্ঠিতি হয়নি, হবেও না।’

তিনি উপস্থিত নারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে।’ এজন্য তিনি আগামী নির্বাচনে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিলে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, বৈষম্যহীন এক কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালাইয়া ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা মোশাররফ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহিলা সমাবেশে স্থানীয় সহস্রাধিক নারী উপস্থিত ছিলেন।

এর-আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি (পটুয়াখালী-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী) ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ কালাইয়া ইউনিয়নের রাধা মন্দিরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় সভায় রাধা মন্দিরের সভাপতি সুভাস মন্ডলসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাউফল উপজেলা এবং কালাইয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘হিন্দু এবং মুসলিম ভাগ হয়েছে মানুষ সৃষ্টির পরে। আল্লাহ সকলকে মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। মানুষে-মানুষে কোনো ভেদাভেদ নাই। রাষ্ট্রের কাছে নাগরিক হিসেবে সকলেই সমান।’

তিনি উপস্থিত হিন্দুদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যারা হিন্দুদের পক্ষের লোক দাবি করেছে তারাই কিন্তু হিন্দুদের সম্পদ দখল দিয়েছে, মন্দির লুটপাট করেছে। জামায়াতে ইসলামী কিংবা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো নেতাকর্মী আজ পর্যন্ত হিন্দুদের সম্পদ দখল করেনি, মন্দির ভাঙচুর করেনি এবং করবেও না। বরং এদেশের আলেম সমাজ হিন্দুদের সম্পদ রক্ষায় পাহারাদারের ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা হিন্দুদের সম্পদ রক্ষায় পাহারাদারের ভূমিকা রাখে তাদের কাছেই হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।’

ইসলামের আলোয় আলোকিত সমাজ গড়তে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘একটিবার জামায়াতে ইসলামী পরীক্ষামূলক ভোট দিয়ে দেখুন আপনাদের স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত হয় কি-না।’

তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে রাষ্ট্রের কাছে মসজিদ কিংবা মন্দির সবই সমানভাবে বিবেচ্য হবে। ধর্মের ভিত্তিতে নয় রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সকলে সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে।’

উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, ‘বন্যা, শীত-গ্রীষ্মসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে জামায়াতে ইসলামী যেভাবে দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে মানুষের পাশে দাঁড়ায় একইভাবে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিকের পাশে দাঁড়াবে।’

রাধা মন্দিরের সভাপতি সুভাস মন্ডল তার বক্তব্য বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের আমলে হাজারো জুলুমের শিকার হয়েও ড. মাসুদ আমাদের পাশে ছিলো। ৫ আগস্ট পরবর্তীতেও ড. মাসুদ আমাদের সুরক্ষায় পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।’

তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের বলেন, ‘আমরা ইনসাফ চাই, আমরা সাহসী মানুষ চাই, যোগ্য এবং সৎ মানুষ চাই। তাই আমরা আমাদের সন্তান মাসুদকে জয় করেই ঘরে ফিরবো।’