মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নের আহ্বান

“সততা, যোগ্যতা, উদারতা, বিনয় ও নম্রতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে এক অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।”

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ডা: শফিকুর রহমান
ডা: শফিকুর রহমান |সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে দলের বর্তমান আমির ডা: শফিকুর রহমান ১০ মে এক বিবৃতি দিয়েছেন। বিবিৃতিতে তিনি দেশবাসীকে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বাংলাদেশের জনগণের নিকট অতি পরিচিত একটি নাম, একজন আলেমে দ্বীন ও ইসলামী চিন্তাবিদ। সততা, যোগ্যতা, উদারতা, বিনয় ও নম্রতা তাঁকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। মহান আল্লাহ প্রদত্ত যোগ্যতা বলে বাল্যকাল থেকেই তিনি তাঁর সমসাময়িক প্রতিটি স্তরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি তাঁর ছাত্র জীবনের শুরু থেকে ইসলামী আদর্শ প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন।’’

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘তিনি তাঁর নিজ এলাকা থেকে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় সংসদে তাঁর গঠনমূলক ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় সংসদে তাঁর বক্তব্য ছিল দিক-নির্দেশনামূলক। ইসলামী শিক্ষার প্রসারে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। কওমি মাদরাসার শিক্ষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল স্মরণীয়।’’

‘‘তিনি সততা, যোগ্যতা, দক্ষতার সাথে কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিল্পখাত একটি লাভজনক খাতে পরিণত হয়।’’

‘‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ছিল। ২০০৬ সালে এক বৈশ্বিক জরিপে বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ ব্যক্তির মধ্যে মাওলানা নিজামীকে তালিকাভূক্ত করা হয়। ২০০৯ সালে অপর এক বৈশ্বিক জরিপে বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০ মুসলিম ব্যক্তির মধ্যে তিনি অন্যতম বলে বিবেচিত হন।’’

“তিনি অনেকগুলো মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন- যা মানুষের আত্মগঠন, পরিবার ও সমাজ গঠনে আলোর দিশা দিবে। দেশে-বিদেশে অসংখ্য সেমিনার, সভা ও সমাবেশে তাঁর দাওয়াতি বক্তব্য মানুষের চিন্তার জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাঁকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।’’

‘‘আমি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে সাবেক আমিরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। মহান আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করছি তিনি তাঁর শাহাদাতকে কবুল করুন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করুন।”

ডা: শফিকুর রহমান বিবৃতিতে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনে শরীক হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।