বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ‘প্রতীক দেখে নয়, দলীয় কর্মকাণ্ড বিবেচনায় ভোট দিতে হবে।’
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নিজ সংসদীয় আসন (পটুয়াখালী ২) বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের পোনাহুরা এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে গভীর নলকূপ (টিউবওয়েল) স্থাপনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর জামায়াতে ইসলামীকে জনগণের কাছে যেতে দেয়া না হলেও জামায়াতে ইসলামী এক দিনের জন্যও সামাজিক কার্যক্রম বন্ধ রাখেনি।’
নিজের ওপর আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতনের কথা তুলে ধরে তিনি জানান, আওয়ামী লীগের শাসনামলে এক রাতের জন্যও নিজ ঘরে ঘুমাতে দেয়া হয়নি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকাই আওয়ামী লীগের দৃষ্টিতে তার অপরাধ ছিল। নিজে এলাকায় আসতে না পারলেও নিজের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এলাকার মানুষের খোঁজ-খবর নেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেছিলেন।
আগামীতে তিনি তার সামাজিক কার্যক্রম আরো ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ড. মাসুদ বলেন, বাউফল কারো একার নয়। বাউফলবাসীকে সাথে নিয়েই তিনি বাউফল উপজেলাকে নতুন বাংলাদেশের মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চান।
দলমত, ধর্ম বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে তিনি বাউফলবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অতীতে যারা বাউফলের জনপ্রতিনিধির চেয়ারে বসে পরিবারতন্ত্র আর দলীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে। জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া যায় না, যাবে না। উন্নয়নে নামে প্রকল্পের টাকা দলীয় নেতাকর্মীদের ভাগ-বাটোয়ারা করে খাওয়ার দিন শেষ। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীদার হবে প্রতিটি নাগরিক।’
জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট মানলে তার আগে গণভোট হলে সমস্যা কোথায়- প্রশ্ন রেখে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘জনগণকে বোকা বানিয়ে ধোঁকা দেয়ার দিন শেষ।’
‘আপনি পরে মানবেন, আগে মানবেন না’- এই লুকোচুরি খেলা বন্ধ করে জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে তিনি অনুরোধ করেন। ড. মাসুদ বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হলে ফ্যাসিবাদের পথ বন্ধ হয়ে যাবে, একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না এই ভয়ে একটি দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটে “না” ভোট দেয়ার জন্য তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের নিদের্শনা দিতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের বিপক্ষে গিয়ে যেই পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে যারাই জনগণের বিপক্ষে যাবে তাদেরও সেই পরিণতি ভোগ করতে হবে। যারা আজকে নিজেদেরকে বড় দল দাবি করে তাদের মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগও নিজেদেরকে এশিয়ার সর্ববৃহৎ দল দাবি করেছিল। সেই বড় দল আজ অস্তিত্বহীন। শুধু অস্তিত্বহীনই নয়, বরং সারাবিশ্বে তাদের কোথাও সম্মানজনক স্থান নেই। জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিলে জনগণই সম্মানের স্থানে নিয়ে যাবে।’
কোনো দলের ইচ্ছাতে নয়, জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি



