সালাহউদ্দিন আহমেদ

দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না এমন প্র্যাকটিস দেখা যায় না

রোববার (২০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

অনলাইন প্রতিবেদক
গণমাধ্যমের সাথে কথা বলছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ
গণমাধ্যমের সাথে কথা বলছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ |নয়া দিগন্ত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘কোনো দলের যিনি প্রধান তিনি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না এমন প্র্যাকটিস দেখা যায় না।’

রোববার (২০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

‘একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী, লিডার অব হাউস’ হওয়ার বিষয়টিতে বিএনপিকে অটল অবস্থানে দেখা যায়।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকটি পদে থাকাটা নিয়ে কিছু প্রস্তাব আসছে। অধিকাংশের মধ্যে একটা মতামত আসছে, প্রধানমন্ত্রী এবং তার সাথে সংসদ নেতার ভূমিকাটা প্রায় অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িত, এই দুই ক্ষেত্রে একত্রে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী লিডার অব দি হাউস থাকতে কোনো অসুবিধা নেই। এক্ষেত্রে প্রায় সকলেই একমত কিন্তু দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কিনা এক্ষেত্রে কিছু বিতর্ক হচ্ছে।’

এ বিষয়ে লিখিতভাবে প্রস্তাব কমিশনকে আগে জমা দিয়েছেন বলে জানান বিএনপির এই নেতা।

পৃথিবীর গণতন্ত্রের সুতিকাগার হিসেবে যুক্তরাজ্যের উদাহরণ টেনে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সেখানেও দলীয় প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হয়ে থাকে। কয়েকটি দেশে মাঝেমধ্যে এটার ব্যতিক্রম হয়ে থাকে। পার্লামেন্টারি পার্টিতে ডিসাইড হয়। পার্টি কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সিলেক্ট করবে, সেটা কোনো ইলেকশন প্রসিডিউর নয়। যারা মেজরিটি পার্টি হয়, পার্লামেন্টে অথবা জোট হয়, তারা পার্লামেন্টারি পার্টি করে ডিসাইড করে কোন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হবেন। এখন সেই ব্যক্তি যদি কোনো একটা দলের প্রধান হন, সেক্ষেত্রে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় না বা তার অযোগ্যতা থাকে না। কারণ এটা একটা ডেমোক্রেটিক প্র্যাকটিস। ডেমোক্রেসিতে কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হলে তাকে অপশন হিসেবে রাজনৈতিক দলের প্রধানের পদটা ছাড়তে হবে এরকম কোনো প্র্যাকটিসটা সাধারণত দেখা যায় না। দুয়েকটা ক্ষেত্রে এক্সেপশন থাকতে পারে। কারণ এটা (দলীয় পদ) একটা তার ডেমোক্রেটিক রাইট।’

তিনি বলেন, ‘দলীয় প্রধান হওয়ার কারণেই কি তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদেও যোগ্যতা ঘোষণা করা হচ্ছে? এরকম একটা প্রশ্ন আসতে পারে। আর দলীয় প্রধান সবসময় প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করবেন এমন তো কথা নয়। পার্লামেন্টারি পার্টিতে ডিসাইড হবে কোন এমপি প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু অপশনটা থাকা ভালো। যিনি দলীয় প্রধান হন, তার যাতে রাইটটা পূর্ণ থাকে, তিনি ইচ্ছা করলে প্রধানমন্ত্রী পদ পাবেন। সেজন্য আমরা বলেছি, এটা ওপেন থাকা ভালো। দলীয় প্রধান ইচ্ছা করলে প্রধানমন্ত্রীত্ব নিতে পারেন যদি পার্লামেন্টারি পার্টিতে ডিসাইড হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘যদি পার্লামেন্টারি পার্টিতে ডিসাইড হয়, তাকে (একই ব্যক্তি) প্রধানমন্ত্রী করা হবে না, অন্য একজনকে করা হবে। সেটা পার্লামেন্টারি পার্টির ডেমোক্রেটিক রাইট চর্চা- সেটা ওপেন রাখার ক্ষেত্রে আমরা আমাদের সাজেশন দিয়েছি এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরণ আমরা বলেছি। যেহেতু দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রীত্ব হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো যোগ্যতা হতে পারে না, সেজন্য এই অপশনটা থাকা উচিত। তার ডেমোক্রেটিক রাইটটা পূর্ণ থাকা উচিত। দলীয় প্রধান ইচ্ছা করলে যদি পার্লামেন্টের পার্টি ডিসাইড করে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য জাতীয় কমিশন একটা ড্রাফট সবার মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে দলগুলোকে প্রণয়ন করেছে। তাতে কোনো অবজারভেশন আছে কিনা, ছোটখাট কোনো সংশোধনী আনতে হবে কিনা, সেটা যার যার দলীয় প্রোগ্রামে আলোচনা করে আগামীকালকে বা পরশুদিন সকালে উপস্থাপনের জন্য সময় নির্ধারণ করেছে কমিশন।’