বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত সংযুক্ত করা যায়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমান সংবিধান মেনে সংবিধানের স্পিরিট অনুযায়ী সরকার গঠন করেছে। বর্তমান সংবিধানে গণভোটের সরাসরি কোনো বিধান নেই। কোনো বিষয়ে জনগণের মতামত নিয়ে সংসদে পাস করা হবে, তারপর সেটি গণভোটে নেয়ার সুযোগ থাকবে। সংবিধান মেনে কাজ করতে হবে। নির্বাচনের আগে না, নির্বাচনের দিনেও গণভোট করা এই সংবিধানে এলাও করেন। এক্ষেত্রে বিএনপি উদারতার পরিচয় দিয়েছে, নির্বাচনের দিন গণভোটের জন্য রাজি হয়েছে; এটি বিএনপির উদারতা।
আজ রোববার ঢাকা ক্রাইম রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন মিলায়তনে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, সক্ষম সংসদ, উন্নত মানের পুলিশ ও পুলিশিং এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, তখন গণতন্ত্র শুধুমাত্র নির্বাচন ও ভোট নয়। গণতন্ত্র হচ্ছে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সঠিকভাবে না চলে, তখন গণতন্ত্রও কার্যকর হবে না। গণতন্ত্র কাজ করার জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে- সেগুলো যদি স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার সাথে পরিচালিত না হয় এবং সঠিক লোকজন দ্বারা না পরিচালিত হয়, তাহলে গণতন্ত্র কাজ করে না।
তিনি বলেন, আল্লাহ যদি আমাদের সরকার গঠনের সুযোগ দেন এবং বাংলাদেশের জনগণ যদি সুযোগ দেন, তাহলে আমরা প্রথম দিন থেকেই সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর করতে পারব। এখন থেকেই আমরা সমস্ত প্রস্তুতি নিয়েছি। ইনশাহ আল্লাহ, প্রায় শেষ করেছি, যাতে সরকার গঠনের সুযোগ পেলে আমরা একটার পর একটা সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করতে পারি।
তিনি আরো বলেন, ঐকমত্য কমিশনে আগামী নির্বাচনের আগে যতটুকু ঐক্যমত হয়েছে, তার বাইরেও কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি নিজের স্বার্থান্বেষী মত অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেয়, সেটি ঐক্যমত হতে পারে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, কেউ যদি ঢাকা থেকেই সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়, তাহলে নির্বাচনের প্রয়োজন কী এবং সংসদের প্রয়োজন কী? আমরা মনে করি, এগুলোর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র বিকশিত হয় না। এখনকার মনোভাব যদি আগের অগণতান্ত্রিক আচরণের প্রতিফলন হয়, যেখানে কেউ যা চায় তা জোর করে করিয়ে নেয়- তাহলে সেটা গণতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টি করে। আমাদের গণতন্ত্রের স্পিরিট ধরে রাখতে হবে, জনগণের আস্থা ও সমর্থন নিতে হবে, জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ যেখানে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে, দ্বিমত পোষণ মানে ঐক্যমত হয়নি। যে বিষয়ে ঐক্যমত হয়নি, সেটিও গণভোটে নেয়া যেতে পারে; তাতেও আমরা রাজি হয়েছি। এটি দেখায় বিএনপি সহনশীল রাজনীতি চাইছে এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চায়। দ্বিমত পোষণ করেও আমরা সম্মান বজায় রাখতে চাই।



