আইন উপদেষ্টা

গুমের অভিযোগগুলো তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে

বর্তমান সরকারও চেষ্টা করছে এই বিষয়ে ‘একাউন্টিবিলি মেকানিজম’ প্রতিষ্ঠা করতে। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন গুমের শিকার না হয়।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরেই গুম বিষয়ক কমিশন গঠন করেছে। যাতে বিগত সরকারের আমলে গুম হওয়া অভিযোগগুলো সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা যায়।

তিনি বলেন, এছাড়াও সরকার জাতিসঙ্ঘের (ইউএন) সাথে গুম সংক্রান্ত বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যাতে এই ধরনের গুমের ঘটনা দেশে আর না ঘটে। আমাদের গর্ব ও প্রত্যাশার জায়গা হচ্ছে, গুম কমিশন যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারও চেষ্টা করছে এই বিষয়ে ‘একাউন্টিবিলি মেকানিজম’ প্রতিষ্ঠা করতে। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন গুমের শিকার না হয়।

শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে ‘রাউন্ডটেবল ডিসকাশন : অন দ্য রোড টু একাউন্টেবিলিটি : কমেমোরেটিং দ্যা ডে ফর দ্যা ভিকটিমস অব এনফোর্সমেন্ট ডিজঅ্যাপেয়ারেন্টস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন ও জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের ঢাকা অফিস যৌথভাবে এই গোলটেবিলের আয়োজন করে।

ড. আসিফ বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশে করা প্রায় ২০ হাজার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের পর বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার এবং অংশীজন আমাদের জানালেন, এসব মামলায় সত্যিকারের কিছু জঙ্গি ও সন্ত্রাসী রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি নাবিলাকে (গুম কমিশনের সদস্য) বলেছি, উগ্রবাদী বা সন্ত্রাসী নয়, এমন কেউ যদি হয়রানিমূলক মামলায় অভিযুক্ত হন, তাদের বিষয়ে কনক্রিট প্রমাণ থাকলে আইন মন্ত্রণালয়ে নিয়ে এলে সেটা দ্রুত সমাধান করা হবে।’

শিল্প উপদেষ্টা আদিলুল রহমান খান বলেন, গুমের সব এভিডেন্স থাকার পরও বিভিন্ন বাঁধার কারণে আমাদের এখনো সংগ্রাম করতে হচ্ছে। গুম কমিশন ইতোমধ্যে দু’টি রিপোর্ট দিয়েছে। এই দু’টি রিপোর্ট দেয়া মানে কমিশনের কাজ শেষ হয়ে গেছে তা নয়।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করেছে কিন্তু এবারের সাড়ে ১৫ বছরের লড়াইটা ছিল অনেক দীর্ঘ এবং ভয়াবহ। পরিণতি ৩৬ দিনে এলেও এর পেছনে হাজার হাজার মানুষের রক্ত এবং তাদের ভয়াবহ নির্যাতনের ইতিহাসের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আমরা বিগত সরকারের নির্যাতনের ডিটেনশন সেন্টার, আয়নাঘরগুলো যদি মিউজিয়াম হিসেবে রক্ষা করতে পারি, তাহলে তা আগামী প্রজন্মের জন্য স্বৈরাচারের ইতিহাসের চিহ্নিত অংশ হয়ে থাকবে।

গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, গুম সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা।