বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ‘মেরুদণ্ডহীন’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, কমিশনের সামনে এখনো নিজেদের সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় না ফিরলে নির্বাচন বয়কট করবে এনসিপি।
রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা যতই এই নির্বাচন কমিশনকে দেখতে পাচ্ছি, ততই বুঝতে পারছি এটি মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠান।’
নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এখন তারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে, যাতে নির্দিষ্ট একটি দল ছাড়া কেউ নির্বাচনে এলে সমস্যা তৈরি হয়।
এনসিপি নেতা বলেন, ভবিষ্যতের বাংলাদেশে যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট একটি দল ছাড়া কেউ ভোট দিতে আসে, তাহলে (নির্বাচন কমিশন বা কোনো দল) সেক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করবে। আর নির্বাচন কমিশন এখন ঠিক সেই দিকেই অগ্রসর হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে তার দলের এমন পর্যবেক্ষণের কারণ ব্যাখ্যা করে নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে, যেখানে কেউ যদি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে অংশ নিতে চায়, তাহলে তারা (ইসি) সেই প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে।
‘দ্বিতীয়ত, আমরা যতই এই নির্বাচন কমিশনকে দেখি, ততই বুঝতে পারি এটি একটি মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন। তৃতীয়ত, নির্বাচন কমিশন এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাপথের দিশা দেখাবে- কিন্তু যতটুকু এখন পর্যবেক্ষণ করছি, আরো দিন দিন আমরা দেখতে পাচ্ছি এটার (নির্বাচন) অধিকাংশ অঙ্গ জুড়ে হলো সামরিক উর্দি পরা পোশাকে এবং বাকি যতটুক আছে সেটা আবার দলীয় পোশাকে আবৃত্ত।’
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সমস্যাগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরছে তাদের দল এবং এই কমিশনের ‘মেরুদণ্ডহীনতা’ ধীরে ধীরে জাতির সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপি নেতা বলেন, ‘আমরা তাদের (নির্বাচন কমিশন) সাথে নিয়মিত বৈঠক করছি, কথা বলছি, তাদের ভুলগুলো দেখিয়ে দিচ্ছি এবং সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি সামরিক উর্দি পরে, দলীয় উর্দি পরে তার মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিতে চায় এবং ভোট না দিতে চায়, তাহলে এনসিপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে পারে।
শেষে নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা তাদের এখনো সুযোগ দিচ্ছি, তাদের সে শুভোদয় হোক এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আসুক। ভোট নেয়ার প্রক্রিয়া তারা শুরু করুক, যেন বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা সচেষ্ট হয়।’