বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সকলকে নিয়ে দেশ গড়ার নীতি গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইব্রাহিমপুর আশিদাগ রোডের একটি মিলনায়তনে কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াত আয়োজিত ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি ‘জামায়াত জনগণের মুক্তি এবং বৈষম্যহীন-ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে; তাই গণমানুষের পরিপূর্ণ মুক্তির আগ পর্যন্ত আমরা কোনোভাবেই থামবো না; আমাদের কেউ থামাতে পারবে না’ বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
কাফরুল দক্ষিণ থানার আমির উপাধ্যক্ষ আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. আবু নাহিদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলোর উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণেই বিগত ৫৪ বছরে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব হয়নি, বরং দেশের দুর্নীতি পরিস্থিতি এখন পর্বত প্রমাণ হয়ে উঠেছে।’
অথচ জামায়াতের দুই মন্ত্রী এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করলেও তাদের বিরুদ্ধে এক টাকার দুর্নীতির অভিযোগ কেউ তুলতে পারেনি। তারা আল্লাহকে ভয় করতেন। আর তাদের এ দায়িত্ব ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। তাই তারা আল্লাহর ওপর ভরসা রেখেই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের জীবন-সম্পদ রক্ষায় সাধ্যমত চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। অথচ জুলুমবাজ সরকার পাতানো ও সাজানো বিচারের নামে প্রসহন করে তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে’।
তিনি শহীদ নেতৃবৃন্দের চেতনা ও প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে সকলকে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
তিনি জামায়াতের ক্রমবর্ধমান গণভিত্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সাড়ে তিন কোটিরও অধিক মানুষ জামায়াতের আদর্শ ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমরা এ বিশাল জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে চাঁদাবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত করেই ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ। আমরা লোক দেখানো শাস্তিতে বিশ্বাস করি না, বরং কারো বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হলে তাকে কঠোর শাস্তি দিতে আমরা কসুর করব না’।
তিনি দেশকে দুর্নীতি ও অপরাধ মুক্ত করতে আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি আহ্বান জানান।
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র, দুর্নীতিমুক্ত করতে পুরোপুরি আপসহীন। আগামী নির্বাচনে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমরা তিন দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রথমত, আমরা ঘুণে ধরা শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থাকে গণমুখী ও জীবনধর্মী করে ঢেলে সাজাবো। যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে পারে। দ্বিতীয়ত, আমরা দেশ থেকে দুর্নীতি শেকড়ের মুলোৎপাটন করব। তৃতীয়ত, আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করব যে সমাজে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মত-পথ নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে।’
তিনি সে প্রতিশ্রুত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ময়দানে আপসহীন থাকার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের দেশের বড় সমস্যারগুলোর একটি। তাই সবার আগে দেশকে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও লুটপাট মুক্ত করতে হবে। জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করব সে সমাজে কেউ অপরাধ করার সাহস পাবে না।’
তিনি সে কাঙ্ক্ষিত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মিরপুর পুর্ব থানা আমির শাহ আলম তুহিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শহীদুল্লাহ, কাফরুল উত্তর থানা আমির রেজাউল করিম মাহমুদ ও কাফরুল জোন সদস্য জসিম উদ্দিন, শিবিরের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিম শাখার সভাপতি রেজাউল করিম ও সেক্রেটারি শান্ত আহমেদ, আতিক হাসান, কাফরুল থানা সভাপতি নাইমুর রশিদ, ডা. আসাদুজ্জামন কাবুল খাইরুল ইসলাম নবিন ও কাফরুল জোন সদস্য জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি



