উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ

‘শারমিন এস মুরশিদের এই বক্তব্যের পেছনে স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় স্থাপন ও সমকামী দূত নিয়োগের মতো বিতর্কিত ইস্যুতে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতেই এই ধরনের ধর্মবিদ্বেষী ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেয়া হয়েছে।’

নিজস্ব প্রতিবেদক

Location :

Dhaka City
উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ
উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ |নয়া দিগন্ত

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেন— ‘মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ আজ সচিবালয়ে তার প্রদত্ত্ব একতরফা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।’

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

মাওলানা রাব্বানী বলেন— ‘তিনি কুমিল্লার মুরাদনগরের ন্যাক্কারজনক ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে দেশের হাজার হাজার কওমি ও আলিয়া মাদরাসার সম্মানিত দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বলৎকারের অভিযোগ এনে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় কালিমা লেপনের করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তার এই বক্তব্য শুধু অযৌক্তিকই নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই আমরা মনে করছি।’

তিনি বলেন— ‘আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই; এদেশের মাদরাসাগুলো মহান আল্লাহ তা’আলার ভয় ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ মোতাবেক চরিত্র গঠনে ভূমিকা পালন করা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ ছাত্র জীবনের মূল্যবান সময় দিয়ে ইলম ও আমলের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার কথা বলে পুরো একটি শ্রেণিকে কলঙ্কিত করা চরম অন্যায় ও ঘৃণিত মানসিকতার পরিচয়।’

তিনি আরো বলেন— ‘শারমিন এস মুরশিদের এই বক্তব্যের পেছনে স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় স্থাপন ও সমকামী দূত নিয়োগের মতো বিতর্কিত ইস্যুতে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতেই এই ধরনের ধর্মবিদ্বেষী ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, এটি শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বাংলাদেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করার নামান্তর। পাশাপাশি দেশপ্রেমিক অসম্প্রদায়িক নাগরিকদের সম্মিলিত ঐক্যবদ্ধ চেতনার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র।’

তিনি বলেন— ‘শারমিন এস মুরশিদকে তার মন্তব্যের জন্য জাতির সামনে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পদ থেকে অবিলম্বে তিনি নিজে পদত্যাগ করবেন অথবা তাকে সরকারকে অপসারণ করতে হবে। ভবিষ্যতে কোনো সরকারি দায়িত্বশীল ব্যক্তি যেন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এ ধরনের দায়িত্বহীন, অসত্য ও উস্কানিমূলক মন্তব্য না করে— সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধি-নিষেধ আরোপ করে আইন পাশ করতে হবে। একইসাথে মাদরাসা শিক্ষার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।’

মহাসচিব আরো বলেন— ‘ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত করতে এ ধরনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ গড়ে তুলতে আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ তাআ‘লা আমাদের ঈমান ও আক্বীদা হেফাজত করে ধর্মীয় শিক্ষার মান অক্ষুণ্ন রাখার তৌফিক দান করুন।’