জুলাই গণহত্যার বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ নাই বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
তিনি বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ বাংলাদেশের প্রতিকূল পরিবেশে রাজপথে জন্ম নিয়েছে। দল গঠনের আগে ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। শেখ হাসিনা হামলা-মামলা নির্যাতন করেও দমাতে পারে নাই। গণঅধিকার পরিষদের রাজনৈতিক সংগ্রামের একটা ইতিহাস রয়েছে। সারাদেশেই আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে। ফলে গণঅধিকার পরিষদ জোটে গেলে যাদের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা আছে, যাদের ভোট আছে এমন দলের সাথে জোটে যাবে। নামসর্বস্ব দল, যাদের সারাদেশে ভোট নাই এমন দল কিংবা যাদের সাংগঠনিক ভিত্তি নাই এমন কোন চিলড্রেন পার্টির সাথে জোট করবে না গণঅধিকার পরিষদ।’
বুধবার (২৯ অক্টোবর) ফেনী শহরে সিজলার চাইনিজ রেস্টুরেন্টে গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আবু হানিফ বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ ২০২১ সালে দল ঘোষণার পর থেকে বলে আসছি আমরা রাজনীতিতে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় শক্তি হতে নয় বরং সরকার গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছি। এই দেশের গণতন্ত্রকামী সচেতন মানুষদের সাথে নিয়ে ইনশাআল্লাহ আগামীতে গণঅধিকার পরিষদ সরকার গঠন করবে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর স্বার্থে দ্বন্দ্বে নিজেরা বিভক্তি হয়ে যাচ্ছে। দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ না ঘটলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নাই। এমনকি এসব চলতে থাকলে আওয়ামী লীগ ফিরে আসার ভিত রচনা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে দেখলাম পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা এক সাক্ষাৎকারে বলেছে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে হবে না হয় আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করবে। একটা কথা পরিষ্কার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৪ শ’ মানুষ জীবন দিয়েছে, ৩০ হাজার আহত হয়েছে। জুলাই গণহত্যার বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ নাই। যদিও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ আওয়ামী লীগকে ফেরাতে ষড়যন্ত্র করছে। যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে প্রয়োজনে আবারো মানুষ রাজপথে নামবে।’
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আব্দুজ জাহের বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু যেই স্বপ্ন নিয়ে আমরা লড়াই করেছি আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পেরেছি? আগে যারা মজলুম ছিল তাদের অনেকেই এখন জুলুমবাজের কাতারে। আগে আওয়ামী লীগ যেভাবে দখল করেছিল ৫ আগস্টের পরও তো সেইগুলো দখলমুক্ত হয়নি, কেবল হাত বদল হয়েছিল।’
উচ্চতর পরিষদের আরেক সদস্য রবিউল হাসান বলেন, ‘ড. ইউনূস রাষ্ট্র চালাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। একসময় অনেকেই বলতো এই সরকারকে আরো পাঁচ বছর চাই, এখন কিন্তু আর সেটা বলছে না। কারণ এই সরকার ঐক্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।’
গণঅধিকার পরিষদ ফেনী জেলার আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান বাহারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রেজাউল করিম সুজনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ইলিয়াস মিয়া,কেন্দ্রীয় সদস্য লায়ন নুর ইসলাম, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আলাল, জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুর রহিম, এবি পার্টির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম বাদল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফেনীর সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক, এনসিপির ফেনী জেলার সংগঠক জুবায়ের, যুব অধিকার পরিষদ ফেনী জেলার সভাপতি পারভেজ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি গাজী বাপ্পি, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি জিয়াউদ্দিন প্রমুখ।



