রাশেদ খাঁন

নুরের ওপর হামলার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে

‘হতে পারে নুরুল হক নুরকে রক্তাক্ত করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টি করা। এজন্যই বলছি, ঘটনার ভালোভাবে তদন্ত হোক।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ
গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ |ছবি : নয়া দিগন্ত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ।

বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খাঁন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক নুরুল হক নুরের ওপর হামলার বিচার না হলে বাজে দৃষ্টান্ত তৈরি হবে। আমরা তো পুরো সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ বাহিনীকে দোষারোপ করছি না। শুধুমাত্র বাহিনীর যারা হামলার সাথে জড়িত তাদের বিচার দাবি করছি।

তিনি বলেন, এতোদিনেও একজন গ্রেফতার না হওয়া রহস্যজনক। তাহলে সরকার হামলার বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিলো? স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। এখনো পর্যন্ত তিনি এই ঘটনায় দুঃখ কিংবা সহমর্মিতা প্রকাশ করেননি। কাউকে গ্রেফতার করার নির্দেশনা দেননি। বরং হামলাকারীদের রক্ষা করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনোভাবে সেটি মেনে নেয়া হবে না।

তিনি আরো বলেন, নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনার দায় নিয়ে তার পদত্যাগ করতে হবে। অনেকে বলছে, এই ঘটনা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র ছিলো। হতে পারে নুরুল হক নুরকে রক্তাক্ত করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টি করা। এজন্যই বলছি, ঘটনার ভালোভাবে তদন্ত হোক। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে। আমরা এই কমিশনের ওপর অনাস্থা রাখছি না। কিন্তু আমাদের আহ্বান থাকবে, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করার। দোষীরা যাতে কোনোভাবেই রক্ষা না পায়, সেটি আমাদের দাবি।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নুরুল হক নুরকে বিদেশে চিকিৎসার নির্দেশনা দেয়া হলেও, সেটি নিয়ে গড়িমসি চলছে। নুরুল হক নুরকে বিদেশে নিলে নাকি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে। কিন্তু রক্তাক্ত করে কি ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে? আমরা সরকারকে বলেছিলাম সংস্কার ও বিচারটা ঠিকঠাক করেন। কিন্তু কী হলো? এখনো পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ বহাল তবিয়তে। আওয়ামী লীগের মিছিল বড় হওয়ার রহস্য কী? সরকারের মধ্য থেকে কেউ প্রটেকশন না দিলে আওয়ামী লীগ মাঠে নামতে পারে না।

রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে নেয়ার পায়তারা জনগণ বরদাস্ত করবে না। সোজাকথা, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ দোসরদের নির্বাচনে নিতে হলে আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে নিতে হবে। এই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তবে বিচারের পর কেউ যদি ভিন্ননামে রাজনীতি করতে চায়, সেটা তখনকার সিদ্ধান্ত। কিন্তু বিচারের আগে তারা রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা রাস্তায় মিছিল করছে, অথচ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কিছু করতে পারছেন না। নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের এই মিছিলের পুরো দায় এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার। তারা জাতীয় পার্টির বিষয়েও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এখন থেকে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের দোসরদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই গণপিটুনি দিতে হবে। নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় সরকার বিচার না করলে যা যা করা দরকার আমরা তাই করবো।

বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য হাসান আল মামুন, আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, মাহফুজুর রহমান, সাংগঠনিক তোফাজ্জল হোসেন, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান,শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান বাপ্পি, সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট প্রমুখ।