ওষুধ শিল্পকে বৈশ্বিক মানে এগিয়ে নিতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

নিকট অতীতে আমাদের দেশের ওষুধ শিল্প ছিলো বিদেনি কোম্পানি নির্ভর। কিন্তু সে অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এখন ৩৮ দেশে আমাদের দেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি করা হয়।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
রাজধানীর শেওড়াপাড়ারায় ঢাকা ১৫-আসনের ওষুধ ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
রাজধানীর শেওড়াপাড়ারায় ঢাকা ১৫-আসনের ওষুধ ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান |সংগৃহীত

আমাদের বিপুল জনসংখ্যা বোঝা নয় বরং মানবসম্পদ; তাই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কর্মের হাতিয়ারে পরিণত করে মানবসম্পদে পরিণত করলেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শেওড়াপাড়ার মেহফিল কনভেনশন হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ঢাকা ১৫-আসনের ওষুধ ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতির (বিসিডিএস) কেন্দ্রীয় নেতা এএএম আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ও বিসিডিএএস এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক। উপস্থিত ছিলেন পেশাজীবী জোনের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হাসান, কাফরুল জোনের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ, আসনের সদস্য সচিব শাহ আলম তুহিন, কাফরুল দক্ষিণ থানা সেক্রেটারি আবু নাহিদ, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থানার আমির সোহেল রানা, সাহিত্য-সংস্কৃতি থানার আমির আবেদুর রহমান, কাফরুল পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত আমির আতিক হাসান রায়হান, আদর্শ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর কামাল উদ্দিন, ব্যবসায়ী বিভাগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ ইসমাঈল, ডা. হাসানুল বান্না, জসিম উদ্দিন, হাফেজ আশিকুর রহমান, আবু নাহিদ, মুফতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় জন্মভূমি। আয়তনে খুবই ছোট হলেও আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। কেউ কেউ এ বর্ধিত জনসংখ্যাকে বোঝা মনে করলেও মানুষ কখনো কোনো দেশের জন্য বোঝা নয় বরং তা অবশ্যই মানবসম্পদ। তাই আমাদের দেশের মানুষ শক্তিশালী জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে। রাসূল (সা.) দুর্বল মানুষের চেয়ে সবল মানুষকে বেশি পছন্দ করতেন। এ সবল দু’ভাবে হতে পারে। এক, শারীরিকভাবে সবল, অপরটি হচ্ছে ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান। মূলত, সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার বড় নিয়ামত। তাই অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। আর দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে একটি স্বাস্থ্যবান জনশক্তির কোনো বিকল্প নেই। তাহলেই আমরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবো।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের একশ্রেণির চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তারা ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাদের হয়ে কাজ করে থাকেন। এক্ষত্রে তারা নীতি-নৈতিকতার কোনো ধার ধারেন না বরং নিজেদের বৈষয়িক সুবিধাকে বেশি গুরুত্ব দেন। মূলত, দুনিয়াবি জিন্দেগির শান-শওকত বাড়ানোর জন্য তাদের লোভে পেয়ে বসে। এজন্য তারা হালাল-হারামের ধার ধারেন না। তারা মানুষের জীবন নিয়ে রীতিমত দায়িত্বহীন আচরণ করেন।

তিনি বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, নিকট অতীতে আমাদের দেশের ওষুধ শিল্প ছিলো বিদেনি কোম্পানি নির্ভর। কিন্তু সে অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এখন ৩৮ দেশে আমাদের দেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি করা হয়। তিনি দেশীয় ওষুধ শিল্পকে বৈশ্বিক মানে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

জামায়াত আমির বলেন, সব চিকিৎসক যেমন খারাপ নন, ঠিক তেমনি সবাই ভালোও নন। একশ্রেণির ওষুধ কোম্পানি চিকিৎসকদের পেছনে অহেতুক বিনিয়োগ করে। তারা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কোম্পানির অনুকূলে কাজ করে জনগণকে ধোকা দেন। হারাম-হালাল বিবেচনা করা হয় না। অথচ যাদের জন্য এসব করা হয় তারা কিন্তু আদালতে আখেরাতে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে না।

তিনি সকলকে ভালো হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদেরকে বিবেক-বিরুদ্ধ কাজ করলে চলবে না বরং সকলকে ভালো হতে হবে। আর ভালো হলে দুনিয়াতে সকলের বাহবা পাওয়া না গেলেও আল্লাহর পক্ষ থেকে মহাপুরস্কার রয়েছে। তিনি জীবনের সকল ক্ষেত্রে একমাত্র আনুগত্য করতে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।