‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি গণমানুষের দাবি’ বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি জামায়াতে ইসলামীর দলীয় দাবি নয়, এই দাবি গণমানুষের দাবি। যার প্রমাণ ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার জরিপে উঠে এসেছে। জরিপে দেখা গেছে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন চায়। একটি মাত্র দল ব্যতীত অন্য সকল রাজনৈতিক দলও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। তাহলে সরকার কার স্বার্থে পিআর পদ্ধতি এড়িয়ে গিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে, সেটি সরকারকে জাতির সামনে স্পষ্ট করতে তিনি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’ রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে দিতে না পারলে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করতে হবে। জনগণ যদি গণভোটের মাধ্যমে পিআর পদ্ধতি এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না চায়, তবে জামায়াতে ইসলামীও চাইবে না। কিন্তু জনগণ যদি চায় তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা কোনো দলের আপত্তি কেন? তাহলে কী নতুন করে ফ্যাসিবাদের উত্থানে অন্তর্বর্তী সরকার সহযোগিতা করছে বলে মনে হয় না?- যদি সরকার ফ্যাসিবাদের উত্থানে সহযোগিতা না করে, তাহলে অনতিবিলম্বে ‘পিআর পদ্ধতি এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’ দিতে গণভোটের আয়োজন করতেই হবে। নতুবা জনগণ রাজপথে নেমে এলে এর সকল দায় সরকারকে বহন করতে হবে।’
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) মতিঝিল পূর্ব থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কমলাপুর শেরেবাংলা রেলওয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ব্যতীত প্রহসনের নাটকীয় নির্বাচন জনগণ প্রতিহত করবে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে নির্দিষ্ট একটি দলকে প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন হবে একটি নাটকীয় নির্বাচন। বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন না ঘটলে, মানুষ দাবি আদায়ে জীবন দিতেও দ্বিধা করে না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে একটি দলের প্রতিনিধিত্বমূলক আচরণ করছে। সরকারের কর্মকাণ্ডে জনমনে সংশয় তৈরি হচ্ছে। এই সংশয় দূর করতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার একটি দলের ভাষায় কথায় কথায় সাংবিধানিক সঙ্কটের দোহাই দিচ্ছে।’
অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা কোন সংবিধানে কোথায় রয়েছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিশ্চিত হবে না। যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সাংবিধানিক সঙ্কটে ভয় দেখাচ্ছে, তারা ক্ষমতায় বসতে পারলে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে অসাংবিধান সরকার হিসেবে অবৈধ ঘোষণা করবে। এর ফলে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক যাবতীয় সংস্কার প্রস্তাব অনায়েসে বাতিল হয়ে যাবে। ফলে জুলাই চেতনার অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই সুযোগে ক্ষমতাসীনরা নতুন রূপে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার প্রয়োজনে এবং নতুন বাংলাদেশ গড়তে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে।’
এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থী জসিমুল হক পাটোয়ারী, মতিঝিল পূর্ব থানার আমির নুরুদ্দিন, থানা সেক্রেটারি খলিলুর রহমান, থানা অফিস সম্পাদক অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসাইন মজুমদারসহ মতিঝিল পূর্ব থানা কর্মপরিষদ ও শূরা সদস্যরা। বিজ্ঞপ্তি